হকির দুর্ভেদ্য গোলরক্ষক ছিলেন আবদুল মাজেদ/ দুলাল মাহমুদ

‘ফুটবল ছিল আমার প্রিয় খেলা। অল্প বয়স থেকেই ফুটবল নিয়ে মেতে থাকতাম। পাড়া-মহল্লায় ফুটবলার হিসেবে খাতির যত্মও পেতে থাকি। আমি তখন খেলতাম গোলকিপার পজিশনে। সেটা ষাট দশকের মাঝামাঝি সময়ের কথা। একদিন আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের হকি খেলা দেখছিলাম। প্রথম বিভাগ লীগের খেলা। তখন অবশ্য হকির একটাই লীগ ছিল। সেদিন আজাদের গোলকিপার কি কারণে যেন অনুপস্থিত। সে সময় আজাদের হকি টিম দেখাশোনা করতেন বিখ্যাত ক্রীড়াব্যক্তিত্ব রণজিত দাস। ফুটবল ও হকির গোলকিপার ছিলেন। দু’ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তিনি তখন হকি খেলতেন সোনালী ব্যাংকে। তিনি আমাকে আগে থেকেই চিনতেন। আমাকে দেখতে পেয়ে আজাদের গোলকিপার হিসেবে খেলতে বলেন। আমার তো আকাশ থেকে পড়ার মত অবস্থা! জীবনে কখনো হকি খেলিনি, হকি খেলার কথা ঘুণাক্ষরে চিন্তাও করিনি। আমি কীভাবে হকি খেলবো? কিন্তু রণজিত দা’র পীড়াপীড়িতে আমি বাধ্য হয়ে খেলতে নামি। তার মত ব্যক্তিত্বের অনুরোধ অগ্রাহ্য করা কারো পক্ষে সম্ভব ছিল না। কার সঙ্গে খেলা ছিল, এখন আর সেটা স্মরণে নেই। তবে ভালো যে খেলেছিলাম, তার প্রমাণ পেতে বেশি সময় লাগেনি। সেদিন থেকে হকির গোলকিপার হিসেবে নতুন করে আমার যাত্রা শুরু হয়। আমি হয়ে উঠি হকির লোক।’ কথাগুলো আবদুল মাজেদের। ছোট-খাট গড়নের এই ক্রীড়াবিদকে দেখলে এখন আর চেনা যাবে না। যৌবনের সেই উন্মাতাল দিনগুলো তিনি পেরিয়ে এসেছেন। কালো চুলগুলো বেশিরভাগই শাদা। তবে খেলোয়াড়ী জীবনের চঞ্চলতাটুকু এখনও হারিয়ে ফেলেননি। আগের মতই প্রাণোচ্ছ্বল ও স্বতঃস্ফূর্ত।
তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে হকির গোলকিপার হিসেবে হাতেগোনা যে ক’জন আলোচনায় উঠে আসেন, আবদুল মাজেদ ছিলেন তাদের অন্যতম। তিনি ছিলেন রীতিমত দুর্ভেদ্য গোলরক্ষক। তাকে ফাঁকি দিয়ে গোল করা ছিল প্রতিপক্ষের জন্য কঠিনতম কাজ। বরং তিনি গোলপোস্ট আগলে থাকলে তার দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা পর্যন্ত ওপরে উঠতে দ্বিধা করতে করতেন না। তারা জানতেন, মাজেদ থাকলে আর চিন্তা কি। তিনি ছিলেন পরম নির্ভরতা। তার টাইমিং, পজিশন জ্ঞান আর সাহস ছিল দুর্দান্ত। পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতা নিয়েও গোলপোস্টের সামনে দাঁড়িয়ে যেতেন অটল পাহাড়ের মত। হকির গোলকি হিসেবে তার সাফল্য পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ফুটবলে গোলরক্ষক হিসেবে জীবন শুরু করার কারণে হকিতে আমার জন্য সুবিধা হয়েছে। ফুটবলে অনেক বেশি জায়গা কভার করতে হয়। তাছাড়া জাম্প দিয়ে বল ঠেকাতে হলে রিফেক্স থাকতে হয়। ফুটবল খেলার সময় এটা আমাকে আয়ত্তে আনতে হয়েছে। এটাই হকির গোলরক্ষক হিসেবে আমার জন্য কাজে দিয়েছে।’
আবদুল মাজেদের জন্ম ঢাকার বেচারাম দেউরীতে। ১৯৪৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তার জন্ম। জন্মস্থানটাই তাকে খেলাধুলার দিকে টেনে নিয়ে যায়। বাড়ির কাছে আরমানিটোলা স্কুল, মাহুতটুলি এলাকা ছিল খেলাধুলার প্রাণকেন্দ্র। সারাক্ষণই জমজমাট থাকতো। এর আকর্ষণ এড়ানো কারো পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাছাড়া তখন তো আর বিনোদনের নানা পথ খোলা ছিল না। খেলাধুলাই ছিল বিনোদনের সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। সেদিনের দিনগুলো এখনও ভেসে ওঠে আবদুল মাজেদের স্মৃতিতে : আমি যে এলাকায় থাকতাম, সে এলাকা সব সময় খেলাধুলায় সরগরম থাকতো। প্রধানতঃ হকি এবং ফুটবলের প্রাধান্য ছিল। আমি ফুটবলে ঝুঁকে পড়ি। ১৯৬৩ সাল থেকেই স্থানীয় ক্লাব পর্যায়ে ফুটবল খেলা শুরু করি। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে ক্ষ্যাপ খেলতে যেতাম। ১৯৬৪ সালে আজাদ বয়েজ ক্লাবের ‘বি’ টিমের হয়ে তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লীগে খেলি। ১৯৬৫ সালে খেলি পাড়ার ক্লাব মাহুতটুলিতে। ১৯৬৬ সালে পুনরায় তৃতীয় বিভাগে খেলি আজাদ বয়েজের হয়ে। তারপর তো হকির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যাই। ফুটবলটা অল্প-স্বল্প খেললেও হকি হয়ে ওঠে আমার এগিয়ে যাবার সোপান। তবে বেচারাম দেউরিতে জন্ম না নিলে আমি খেলোয়াড় হতে পারতাম কিনা সন্দেহ।’
আজাদ বয়েজের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেললেও আবদুল মাজেদ ১৯৬৭ সালে পাড়ার ক্লাব মাহুতটুলির হয়ে প্রথম বিভাগে হকি খেলা পুরোপুরিভাবে শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি নিজের সুদৃঢ় অবস্থান গড়ে নিতে সক্ষম হন। সে বছরই তিনি ইস্ট পাকিস্তান টিমের হয়ে খেলার সুযোগ পান। পাকিস্তানের ভাওয়ালপুরে জাতীয় হকি চ্যাম্পিয়নশীপে খেলতে যান। এই চ্যাম্পিয়নশীপে খেলার আগে পাকিস্তানের সারগোদা, করাচী, খায়েরপুর, লাহোরসহ বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেন। ১৯৬৮ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে তিনি ইস্ট পাকিস্তান দলে ছিলেন। তবে দ্বিতীয় গোলকিপার হিসেবে। প্রথম গোলকিপার ছিলেন রণজিত দাস। একই বছর রাওয়ালপিন্ডিতে ইস্ট পাকিস্তান দলের হয়ে খেলেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকায় জাতীয় হকি চ্যাম্পিয়নশীপে ইস্ট পাকিস্তান দলের খেলোয়াড় ছিলেন। ১৯৬৯ সালে লাহোরে জাতীয় যুব হকি চ্যাম্পিয়নশীপে তিনি ইস্ট পাকিস্তান যুব দলের নেতৃত্ব দেন। সহ-অধিনায়ক ছিলেন হাবিবুল আলম। সেই সফরে যে দুটি ম্যাচ খেলেন, তার মধ্যে লাহোরের সঙ্গে ড্র এবং ডেরা ইসমাইল খানের কাছে হেরে যান। সে বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় খেলেন। তাতে চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় বিশ্ব ও এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান দলের বিপক্ষে ইস্ট পাকিস্তান দলের হয়ে খেলেন। এই ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে আবদুস সাদেক, ইব্রাহীম সাবের ও তিনি লাহোরে পাকিস্তান জাতীয় হকি দলের ক্যাম্পে সুযোগ পান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পে আবদুস সাদেক ও আমি যোগ দিয়েছিলাম। বিয়ের কারণে ইব্রাহীম সাবের যেতে পারেননি। কয়েক দিন ক্যাম্প করার পর রাজনৈতিক কারণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আমরা চলে আসি। তবে আবদুস সাদেক এবং আমার দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবে পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। তখন পাকিস্তানের এক নম্বর গোলকিপার ছিলেন সেলিম শেরওয়ানী। এরপরই ছিল আমার অবস্থান। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় খেলা হয়নি। এ প্রসঙ্গে বলা যায়, সে সময় ইস্ট পাকিস্তান দলে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রণজিত দাস, পুলিশের আবদুল মান্নান, জাম্বু। তবে একটা পর্যায়ে আমি হয়ে উঠি পয়লা নম্বর গোলকিপার।’
আবদুল মাজেদ ১৯৭২ সালের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে ভারতে খেলতে যান। সেই সফরে কলকাতায় তিনটি, দিল্লীতে দু’টি, চণ্ডিগড়ে দুটি, কানপুরে দুটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেন। একই বছর অক্টোবরে বাংলাদেশ দল হিসেবে পরিচিত ঢাকা ইলেভেনের হয়ে দিল্লীতে খেলতে যান নেহরু কাপ হকি টুর্নামেন্ট। ১৯৭৮ সালে সফরকারী শ্রীলংকা দলের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট ম্যাচ ও আঞ্চলিক ম্যাচ খেলেন। একই বছর ব্যাংককে অষ্টম এশিয়ান গেমস হকি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছিলেন। ব্যাংকক থেকে ফিরে এসে জাতীয় দল থেকে অবসর নেন। তবে ঘরোয়া হকি খেলা অব্যাহত রাখেন। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলার হয়ে খেলেন জাতীয় হকি চ্যাম্পিয়নশীপে। এর মধ্যে ঢাকা জেলা ১৯৭৫ ও ১৯৭৭ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত হকি লীগে খেলেন মাহুতটুলির হয়ে। এর মধ্যে মাহুতটুলি ১৯৭৪ সালে লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়। সেটি ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথম হকি লীগ। ১৯৭৯ সালে তিনি যোগ দেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে। যে তিন বছর খেলেন, তার মধ্যে প্রথম দু’বছর মোহামেডান লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৭৯ সালে তিনি চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন। ১৯৮২ সালে মাহুতটুলি থেকে রূপান্তরিত উষা ক্রীড়াচক্রে যোগ দেন। ১৯৮২ ও ১৯৮৩ সালে পাড়ার এই ক্লাবে খুব বেশি সিরিয়াস হয়ে খেলেননি। তিনি ১৯৬৮ ও ১৯৬৯ সালে জগন্নাথ কলেজের হয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ফুটবল খেলেন।
আবদুল মাজেদ যে সময় খেলা শুরু করেন, তখন কাউকে প্রশিক্ষক হিসেবে পাননি। যা কিছু শিখেছেন নিজের চেষ্টায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘হকিতে আমাকে কেউ কিছু শেখায়নি। আসলে তখন তো পেশাদারি দৃষ্টিভঙ্গিই ছিল না। সিনিয়রদের অনুকরণ করে আমরা যেটুকু খেলার খেলতাম। তবে আমার ওস্তাদ ছিলেন রণজিত দাস। তিনি ছিলেন আমার আদর্শ। তাকে অনুসরণ করার চেষ্টা করতাম। তাছাড়া আমাদের পাড়ার আলমগীর আদেল, বশীর আহমেদ, ইব্রাহীম সাবের, শামসুল বারী, সোনা মিঞা প্রমুখ আমাকে সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। তবে খেলতে খেলতে আমার মনে হয়েছে, ভালো গোলকিপার হতে হলে সাহস, পজিশন জ্ঞান, কভারিং ও তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়ার মত বুদ্ধিমত্তা থাকতে হবে। আর এখন তো খেলায় বেশ পরিবর্তন এসেছে। আগে ছিল স্কিল ও টেকনিকের খেলা। খেলায় ছিল ব্যক্তিগত ক্যারিশমা আর চোখ জুড়ানো ড্রিবলিং। অ্যাস্ট্রো টার্ফে খেলা শুরু হওয়ায় খেলায় এসেছে হিট অ্যান্ড রান পদ্ধতি। যে কারণে খেলার ধরন-ধারণ বদলে গেছে।’
আবদুল মাজেদ জীবনে অসংখ্য হকি ম্যাচ খেলেছেন। এর মধ্যে স্মরণীয় হয়ে আছে কিছু কিছু ম্যাচ। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৯৭০ সালে ঢাকা স্টেডিয়ামে শক্তিশালী পাকিস্তান জাতীয় দলের সঙ্গে ইস্ট পাকিস্তান দলের হয়ে খেলার কথা কিছুতেই ভুলতে পারবো না। দুর্ধর্ষ সেই টিমের বিপক্ষে খেলার কথা শুনে টেনশনে পড়ে যাই। চোখের ঘুম হারাম হয়ে যায়। আমি রীতিমত শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। কিন্তু মাঠে খেলতে নামার পর সমস্ত উদ্বেগ-উৎকন্ঠা নিমিষেই হাওয়া হয়ে যায়। লড়াকু মনোভাব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি। পাকিস্তান টিমের আক্রমণগুলো বুক চিতিয়ে রুখে দেই। পেনাল্টি কর্নার স্পেশালিস্ট তানভীর দার, সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ডের নাম মনে পড়ছে না, তাদের নিশ্চিত গোলের শটগুলো ঠেকিয়ে দেই। আমাদের ফরোয়ার্ড লাইনও দুরন্ত খেলে। খেলায় প্রথমে গোল করেন আমাদের এহতেশাম সুলতান। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই গোলটি বাতিল করে দেন আম্পায়ার আলমগীর মোহাম্মদ আদেল। আমাদের অনমনীয় দৃঢ়তার কারণে পাকিস্তান দল গোল করতে পারছিল না। ওদের তখন নাজেহাল অবস্থা। ঠিক সেই সময়ে অফসাইড থেকে গোল করেন তানভীর দার। অথচ আম্পায়ার আলমগীর আদেল সেটিকে গোল হিসেবে ঘোষণা করেন। আমরা বিতর্কিত এক গোলে হেরে যাই। তবে সেদিন পাকিস্তান দল বুঝতে পেরেছিল, আমরাও হকি খেলতে পারি। এছাড়া ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে চণ্ডিগড়ে শক্তিশালী রোভার্স ক্লাবের সঙ্গে, কানপুরে কানপুর ইলেভেন এবং কানপুর ইউনিভার্সিটির হয়ে বোধকরি ভালোই খেলেছিলাম।’
আবদুল মাজেদ জীবনে অনেক খেলা দেখেছেন। তার হৃদয়ে আঁচড় কেটেছে অনেক খেলোয়াড়। তবে বাঙালি খেলোয়াড়দের মধ্যে আবদুস সাদেক, ইব্রাহীম সাবের, বশীর আহমেদের খেলা তাকে অভিভূত করেছে। আর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শান্টা, কায়েস, ফুয়াদ, সাইফুল, খাজা, কামাল, সাদেক, জিমির খেলা তার ভালো লেগেছে। বিশেষ করে জিমির খেলার তিনি উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। গোলকিপার হিসেবে আনভীর আদেল ও ওসমানের খেলা তার দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়।
আবদুল মাজিদ দুঃখ করে বলেন,‘পাকিস্তান আমলে আমাদের খেলার তেমন সুযোগ ছিল না। সবেধন নীলমণি ছিল প্রথম বিভাগ হকি লীগ। এছাড়া মাঝেমধ্যে ছিল পাকিস্তান সফর। আর এখন কত সুযোগ, কত সুবিধা। তারপরও হকি কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছে না। আরমানিটোলা স্কুলের মাঠ ছিল হকির প্রজননক্ষেত্র। অথচ সেই মাঠে এখন হকি খেলার কোনো সুযোগ নেই। মাঠটি এলাকার ছেলেদের হাতছাড়া হয়ে গেছে। পর্যাপ্ত মাঠ না থাকলে খেলোয়াড় আসবে কোথা থেকে?’
খেলা ছাড়ার পর আবদুল মাজেদ আর খেলাধুলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকেননি। আসলে নিজের থেকে কোনো কিছুতে সংশ্লিষ্ট হতে তার মন চায়নি। যে কারণে জীবনের একটি উজ্জ্বল অধ্যায়কে তিনি ভুলে থাকতে চেয়েছেন। তিনি যে জীবনযাপন করেন,সেখানে হকির কোনো স্থান নেই। তবে সুযোগ পেলে হকি খেলা দেখতে কার্পণ্য করেন না। কেননা, তিনি তো হকিরই মানুষ। হকিতে একটু সাফল্য এলে কিংবা ভালো কিছু করলে তার মনটা কানায় কানায় ভরে যায়। #
১৬-১২-২০০৮

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোনালি অতীতের দিনগুলো / বশীর আহমেদ

আছি ক্রিকেটে আছি ফুটবলেও

ক্রীড়া সাংবাদিকতার মূল্যায়নের দিন/ দুলাল মাহমুদ

‘ফ্লাইং বার্ড’ বলাই দে/ দুলাল মাহমুদ

‘স্বপ্ন দিয়ে তৈরী সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা’ / দুলাল মাহমুদ

বহুদর্শী ক্রীড়াবিদ মনিরুল হক/ দুলাল মাহমুদ

ফুটবলের সৌন্দর্য, সৌন্দর্যের ফুটবল / দুলাল মাহমুদ

বিশ্বের পরাশক্তি বিশ্ব ফুটবলের খর্ব শক্তি / দুলাল মাহমুদ

এ কেমন নিষ্ঠুরতা? দুলাল মাহমুদ

ফুটবলে প্রথম বাঙালি স্টপার মোবাশ্বার/ দুলাল মাহমুদ