পোস্টগুলি

জুন ২৬, ২০১১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

হকি অন্তঃপ্রাণ আলমগীর মোহাম্মদ আদেল/ দুলাল মাহমুদ

আরমানিটোলা স্কুল ও স্কুলের মাঠকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলের হকির যে জাগরণ ঘটে, প্রাথমিকভাবে তা বিকশিত হয় আশপাশের এলাকায়। এরপর ছড়িয়ে পড়ে ব্যক্তি থেকে পরিবারেও। অনেক পরিবারে ঐতিহ্যের অংশে পরিণত হয় হকি খেলা। এমন একটি পরিবার হলো ‘আদেল পরিবার’। আরমানিটোলা স্কুল থেকে উত্তর দিকে দৃষ্টি দিলে ‘শরফুদ্দীন হাউজ’ নামক যে বনেদী বাড়িটি দৃষ্টিগোচর হয়, সেটাই আদেল পরিবারের আদি বাড়ি। এটি এদেশের হকির অন্যতম সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। এ বাড়ি থেকে জাতীয় পর্যায়ের বেশ ক’জন খেলোয়াড় উঠে আসার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে হকির প্রসার ও মানোন্নয়নে। এ বাড়িরই কৃতী সন্তান আলমগীর মোহাম্মদ আদেল। এদেশের হকির একটি পরিচিত নাম। খেলোয়াড় হিসেবে যেমন, সংগঠক হিসেবেও তার যথেষ্ট সুখ্যাতি রয়েছে। আলমগীর মোহাম্মদ আদেলের জন্ম ঢাকার আরমানিটোলায়, ১৯৩৩ সালের ৩০ নভেম্বর। খেলাধুলায় সংশ্লিষ্ট হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরমানিটোলা স্কুলে ক্লাস থ্রিতে ভর্তি হওয়ার পর খেলাধুলা হয়ে ওঠে আমার জীবনের অন্যতম সোপান। ক্রীড়াক্ষেত্রে এই স্কুলের ছিল গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। আমাদের চোখের সামনে ঘুরে বেড়াতেন দেশসেরা ক্রীড়াবিদরা। তাদের অন্যতম হলেন ওয়াজির

নূর আহমেদ : ছিলেন ব্যাডমিন্টনে, ছিলেন ফুটবলেও/ দুলাল মাহমুদ

খেলার মাঠে তার উপস্থিতি এখন খুব একটা দেখা যায় না। অবশ্য শারীরিক অসুস্থতার কারণে একটা সময় তিনি নিজেই নিজেকে গুটিয়ে নেন। তারপর আড়ালে চলে যাবার পর তার খোঁজ আর কেউ নেয়নি। তিনিও আর ফিরে আসার তাগিদ বোধ করেননি। তবে যারা বাংলাদেশ বেতারের শ্রোতা,তাদের কাছে তিনি এখনও পরিচিত নাম। ধারাভাষ্যকর কিংবা ক্রীড়া বিশ্লেষক হিসেবে এবং কখনো-সখনো নাট্যশিল্পী হিসেবে তার কণ্ঠ পৌঁছে যায় অনেকের কাছে। কদাচিৎ টেলিভিশনেও তার উপস্থিতি দেখা যায়। অথচ একটা সময় ফুটবলার ও ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ছিলেন সুপরিচিত। ফুটবল খেলেছেন কলকাতা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে আর ব্যাডমিন্টনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশীপে। তার এই অসাধারণ কীর্তি চাপা পড়ে গেছে কালের বিবর্তনে। বর্তমানে তার বয়স ৭৩। সারা দেহে সময়ের আঁচড়। তাকে দেখলে এখন আর বোঝার উপায় নেই যে, একটা সময় তিনি ছিলেন কতটা দেদীপ্যমান। কতটা উজ্জ্বল। বহমান সময় কেড়ে নিয়েছে তার সেই ঔজ্জ্বল্য। তিনি নূর আহমেদ। তার পরিচয়ের গন্ডি অনেক দূর বিস্তৃত। ফুটবলার, ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়, কোচ এবং সর্বোপরি ধারাভাষ্যকর হিসেবে ক্রীড়াঙ্গনে আলাদা একটা অবস্থান গড়ে নিতে সক্ষম হন তিনি

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান : ক্রীড়া সাংবাদিকতায় মহীরুহ/ দুলাল মাহমুদ

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান। একটি নাম। একটি বর্ণিল ইতিহাস। এই নামটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক না-বলা কথা। এদেশের ক্রীড়াঙ্গন যাদের মাধ্যমে পল্লবিত হয়েছে, তিনি তাদের একজন। ক্রীড়াবিদ হিসেবে যেমন অবদান রেখেছেন, তেমনিভাবে কালের করতলে সমুজ্জ্বল আছেন ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবেও। এদেশের ক্রীড়া সাংবাদিকতা যাদের হাত ধরে আলোকিত হয়েছে, তিনি তাদের অন্যতম। তবে ক্রীড়া সাংবাদিকতাকে রূপে-রসে-রঙে বর্ণিল করে তুলতে তার ছিল নিরলস ধ্যান-জ্ঞান-সাধনা। ক্রীড়া সাংবাদিকতাকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিতের ওপর দাঁড় করাতে তিনি কখনো আপোষ করেননি। যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছেন সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে। ক্রীড়া সাংবাদিকতায় তিনি পরিণত হয়েছেন মহীরুহে। বর্ণাঢ্য এক জীবন মুহাম্মদ কামরুজ্জামানের। ক্রীড়াঙ্গনে সবার কাছে তিনি পরিচিত ‘জামান ভাই’ হিসেবে। সবারই খুব কাছের মানুষ। তিনি তার ক্যারিশমা দিয়ে নিজের আলাদা একটা অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হন। অবশ্য একদিনেই তা গড়ে ওঠেনি। খেলার মাঠের আলো-হাওয়ায় তিনি বেড়ে উঠেছেন। দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। খেলা ছাড়ার পর খেলার মাঠের সঙ্গে সম্পর্কটা কখনো আলগা হতে দেননি। বরং সম্পর্কের বুননটা করেছেন সুদৃঢ়। ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে তি

এককালের দুরন্ত হার্ডলার জাহাঙ্গীর ফয়েজ/ দুলাল মাহমুদ

তিনি যখন পাশ দিয়ে হেঁটে যান, সহজেই সবার দৃষ্টি কেড়ে নেন। অন্য সবার চেয়ে একটু যেন আলাদা। গড়পড়তা বাঙালির তুলনায় বেশ দীর্ঘদেহী। সুস্বাস্থ্য ও সুদেহের অধিকারী। সুপুরুষ বলতে যা বোঝায়, তিনি তাই। বয়সের কারণে কিছুটা টাল খেলেও চেহারায় লালিত্য ও ঝলমলে ভাবটা এখনও স্পষ্ট। আভিজাত্য পুরোমাত্রায় বিদ্যমান। শারীরিক কাঠামোর কারণে নিজেকে আলাদাভাবে চিনিয়ে দিলেও ক্রীড়াঙ্গনের তিনি অত্যন্ত পরিচিতি মুখ। অ্যাথলেটিকস অঙ্গনে তাকে সবাই তাকে চেনেন। সমীহ করেন। নিজে অ্যাথলেট ছিলেন। ছিলেন দুঁদে সংগঠকও। তিনি এবিএম জাহাঙ্গীর ফয়েজ। ১৯৪৩ সালের ২ জানুয়ারি তার জন্ম। ঢাকার আড়াইহাজারে তার পৈতৃক নিবাস হলেও তিনি জন্মেছেন নাটোরে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাবা ছিলেন সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা। তাঁর ছিল বদলির চাকরি। এ কারণে নানা জায়গায় তাকে ঘুরতে হয়। চাকরিসূত্রে নাটোরে থাকাবস্থায় আমার জন্ম।’ শৈশবেই খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃত্ত হন তিনি। অ্যাথলেটিকস ও ফুটবলের সঙ্গে গড়ে তোলেন তার মিতালী। খেলাধুলার জন্য বাবা-মা’র অনেক বকা আর মারধর খেতে হয়েছে। স্মৃতির পাতা উল্টিয়ে তিনি জানান,‘নানা জায়গায় ভাসতে ভাসতে চট্টগ্রামে গিয়ে থিতু হই। ১৯৫২ সালে কাস থ্রি

আবদুল হামিদ : বর্ণাঢ্য এক ক্রীড়াব্যক্তিত্ব / দুলাল মাহমুদ

কী দিয়ে তার পরিচয় দেব? তিনি এত বেশি পরিচিত যে, তার আর কোনো পরিচয়ের প্রয়োজন পড়ে না। এক নামেই সবাই তাকে চেনেন। শুধু চেনেন বললে ভুল বলা হবে। সবাই তাকে ভালোবাসেন। তাকে আপন মনে করেন। কোনো কিছু না ভেবে এক কথায় বলা যেতে পারে, তিনি আবদুল হামিদ। আমাদের সবার ‘হামিদ ভাই’। ছোট-বড় সবার কাছেই তিনি এই নামে পরিচিত। বয়সের ব্যবধান এক নিমিষেই ঘুচিয়ে দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন সবার কাছের মানুষ। এরপর কি আর কোনো কিছু বলা বা লেখার প্রয়োজন আছে? এই নামটি কে চেনে না? বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের পরিচিত মুখ হিসেবে অল্প যে ক’জন ক্রীড়াব্যক্তিত্ব আমাদের চোখে ভেসে ওঠেন, তিনি তাদের অন্যতম। তিনি পরিণত হয়েছেন বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের ব্র্যান্ড নেম-এ। এ দেশের ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি ইঞ্চি মাটি তাকে চেনে। চেনে ধুলিকণাও। ক্রীড়াঙ্গন তো বটেই, ক্রীড়াঙ্গনের বাইরেও তিনি সমানভাবে পরিচিত। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত ছড়ানো তার পরিচয়। এক সময় খেলেছেন, খেলা ছাড়ার পর খেলা পরিচালনা করেছেন। হয়েছেন ক্রীড়া সংগঠক। ক্রীড়াঙ্গন থেকে তিনি কখনোই দূরে থাকেননি। কোনো না কোনো পরিচয়ে ক্রীড়াঙ্গনকে সরব রেখেছেন তার প্রাঞ্জল ও প্রাণবন্ত উপস্থিতি দিয়ে। ক্রীড়া সাংবাদিক

নিবেদিতপ্রাণ অ্যাথলেট আবদুল খালেক/ দুলাল মাহমুদ

আমাদের মতো দেশে অপেশাদার কাঠামোয় শুধু ক্রীড়াঙ্গনকে অবলম্বন করে জীবনযাপন করা মোটেও সহজ নয়। তারপরও কেউ কেউ খেলাধুলাকে ভালোবেসে এমন একটি অনিশ্চিত জীবনকে বেছে নিতে একটুও দ্বিধা করেন না। চাওয়া-পাওয়ার হিসাব না করেই জীবনের বড় একটি সময় কাটিয়ে দেন খেলার মাঠে। নিজে খেলেন এবং অন্যকে খেলতে উদ্বুদ্ধ করেন। খেলোয়াড়ী জীবন শেষে গড়ে তোলেন নতুন নতুন ক্রীড়াবিদ। এটাই হয়ে ওঠে নেশা ও পেশা। খেলাধুলার প্রতি নিবেদিতপ্রাণদের একজন হলেন মোঃ আবদুল খালেক। জীবনের শুরু থেকেই সেই যে খেলাধুলায় জড়িয়ে পড়েন, তা আর কখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। খেলাকে ভালোবেসে কাটিয়ে দিচ্ছেন জীবনের সেরা সময়। তিনি জীবনে চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসতেন। আর এই চ্যালেঞ্জে জয়ী হওয়াটাও ছিল তার পরম পাওয়া। জীবনের শুরুতে ছিলেন স্প্রিন্টার, তাতে যে সফল ছিলেন, তার প্রমাণ এখনও তিনি সেই পরিচয়ে পরিচিত। স্প্রিন্টার হিসেবে তার পাওয়ার ও স্পিড ছিল ন্যাচারাল। সময়ের দাবিতে ট্র্যাক পরিবর্তন করে হন হার্ডলার। এক্ষেত্রেও সাফল্যের শীর্ষবিন্দু ছুঁয়েছেন। অ্যাথলেটিকস মাঠে গড়াতে বিলম্ব হওয়ায় টুপ করে নেমে পড়েন সুইমিংপুলে। তাতেও তিনি বিফল হননি। দলের প্রয়োজনে কাবাডি ও ভলিবল কোর্টে

ম্যারাথনবিদ রতন/ দুলাল মাহমুদ

যারা ঘন্টার পর ঘন্টা হাঁটতে পারেন কিংবা দৌড়াতে পারেন, তারা অন্যদের তুলনায় একটু যেন আলাদা। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হলে প্রয়োজন হয় অপরিসীম ধৈর্য, মনোবল, সাহস ও স্ট্যামিনার। সাধারণের তুলনায় হতে হয় অনেক বেশি কষ্টসহিষ্ণু। তাদের মধ্যে কাজ করে হার না মানা অনমনীয় এক লড়াকু মনোভাব। সবাই এটা পারেন না। এ কারণে অ্যাথলেটিকসের অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও মর্যাদাকর ইভেন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে ম্যারাথন। এ দৌড়ের আয়োজনও করা হয় বেশ ঘটা করে। শুধু ম্যারাথন আয়োজনের জন্য সুপরিচিত পৃথিবীর অনেক বড় বড় শহর। যারা ম্যারাথনে জয়ী হন, তাদের দেখা হয় শ্রদ্ধা ও সমীহর চোখে। আমাদের দেশে ম্যারাথন দৌড় ও ম্যারাথন দৌড়বিদ খুব একটা দেখা যায় না। জাতীয় অ্যাথলেটিকসের অংশ হিসেবেই কোনোক্রমে টিকে আছে ম্যারাথন। অথচ ম্যারাথনবিদ মানে যেন জীবনের জয়গানকে সমুন্নত রাখা, অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলা। আর এই অসম্ভবের পথে ছুটে চলাদের একজন হলেন এ কে এম জহুরুল হক রতন। সেই দুরন্ত কৈশোরেই তার অবিরাম ছুটে চলার নেশা। আর এই নেশাটা ধরিয়ে দেন তার বড় ভাই রেজাউল হক বাচ্চু। বাচ্চুও ম্যারাথনবিদ হিসেবে ছিলেন সুখ্যাত। ভাইয়ের দেখাদেখি সেই ষাট দশকে ছোট্ট এই ঢাকা শহরের সংকীর্ণ র

‘বাঙাল কা টাইগার’ খ্যাত হকির সোনা মিয়া/ দুলাল মাহমুদ

এখন কম-বেশি সবাই তাকে চেনেন হকির দেশসেরা সেন্টার ফরোয়ার্ড রাসেল মাহমুদ জিমির পিতা হিসেবে। রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে এটি যেমন তিনি অনুভব করেন, তেমনিভাবে অপরিচিত কারো সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার সময় গর্বিত এক সন্তানের জনক পরিচয়টাই মুখ্য হয়ে ওঠে তার। এ নিয়ে তার কোনো আক্ষেপ নেই। বরং তাতে তিনি গর্বিত ও আনন্দিত। তার এই গর্ব ও আনন্দ তিনি সগৌরবে জানিয়ে দিতে মোটেও কার্পণ্য করেন না। ছেলের গৌরবে তিনি কতটা গৌরবান্বিত ও বিমোহিত- তা অনুধাবন করা যায় তার সঙ্গে কথা বললে। সর্বক্ষণ তিনি ছেলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এটাও জানাতে ভুল করেন না যে, ছেলে তার চেয়ে অনেক বড় খেলোয়াড়। অথচ হকি অঙ্গনে তার পরিচয়ও হেলাফেলার নয়। একজন জাত হকি খেলোয়াড় ছাড়াও হকি কোচ, আম্পায়ার, সংগঠকসহ নানা পরিচয়ে তিনি সমৃদ্ধ। সব মিলিয়ে তিনি হকির একজন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব। তদানীন্তন পাকিস্তান আমলে অল্প যে ক’জন বাঙালি হকি খেলোয়াড় আলাদাভাবে দৃষ্টি কাড়তে পেরেছিলেন, তাদের একজন হলেন আবদুর রাজ্জাক। ‘সোনা মিয়া’ নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। স্টিকের ভেল্কি তো ছিলই, সে সঙ্গে তার মারকুটে ভঙ্গিমা তাকে চিনিয়ে দেয় আলাদাভাবে। এ কারণে পাকিস্তানী খেলোয়াড়রা পর্যন্ত