পোস্টগুলি

জুন ১৫, ২০১৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ইংল্যান্ড কেন কলঙ্ক ঘোচাতে পারছে না? দুলাল মাহমুদ

ছবি
একসময়ের ঔপনিবেশিক শক্তি ইংল্যান্ডকে নিয়ে নিজের ভিতরে তেমন কোনো উত্তাপ, উচ্ছ্বাস বা উত্তেজনা অনুভব করি না। এর কারণ হতে পারে, বৃটিশদের রক্তে লেগে আছে অনেক অভিশাপ, অনেক কলঙ্ক, অনেক পাপ। সেটা মন থেকে হয়তো মেনে নিতে পারি না। উপমহাদেশে তাঁদের কলঙ্ক ও পাপের যে ধারা, সেটা তো চিরদিনই বইতে হবে। এ কারণে বিশ্বকাপ ফুটবলে ইংল্যান্ড হারলে মনের মধ্যে এমনিতে কোনো হেলদোল হয় না। তবে অনেক ফুটবল অনুরাগীর মতো আমারও আক্ষেপ হয়। অনুগ্রহ হয়। অনুকম্পা হয়। বৃটিশরা যে কেবল আমাদের শাসন ও শোষন করেছে তাই নয়, তাঁদের কাছ থেকে আমরা পেয়েছিও অনেক। এ কথা তো অস্বীকার করা যাবে না, আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক তো বৃটিশরা। এর আইন-কানুন থেকে শুরু করে ফুটবলের প্রসার ও মানোন্নয়নে তাঁদের সদর্থক ভূমিকা ইতিহাস হয়ে আছে। বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো ফুটবল প্রতিযোগিতা ‘এফএ কাপ’ বৃটিশদের অবদান। ১৮৭১ সাল থেকে এ প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়ে আসছে। প্রথম ফুটবল লিগ প্রবর্তনের কৃতিত্বও বৃটিশদের। ১৮৮৮ সাল থেকে এই ইংলিশ লিগ বিশ্ব ফুটবলকে সমৃদ্ধ করে আসছে। পৃথিবীর যে সব স্থানে বৃটিশরা উপনিবেশ স্থাপন করেছে, সে সব জায়গায় তাঁরা ছড়িয়ে দিয়েছে ফুটবলের বীজ। ফুটবল যে আজ

লাল মরিচের ঝাল / দুলাল মাহমুদ

ছবি
‘চিলি’ বললেই তো কেমন একটা ঝাল ঝাল লাগে। যদিও বাংলাভাষী হওয়ার কারণে লঙ্কা বা মরিচ বললে যতটা ঝাঁজালো লাগে, ইংরেজিতে ততটা তেজ অবশ্য পাওয়া যায় না। একটু যেন তীব্রতা কমই লাগে। বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে লিখতে গিয়ে হঠাৎ লঙ্কা বা মরিচের প্রসঙ্গ উত্থাপিত হওয়ায় যে কেউই বিভ্রান্ত হতে পারেন। হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। আসলে বিশ্বকাপ ফুটবলে চিলির চমকপ্রদ নৈপুণ্যের কারণেই এ বিষয়টি উঠে এলো।   ‘চিলি’ নামে যে একটি দেশ আছে, সেটা তো আর আমাদের অজানা নয়। লাতিন আমেরিকার এই দেশটি সাহিত্য ও রাজনৈতিক কারণেই অনেক বেশি পরিচিত। ১৯৭৩ সালে সামরিক জান্তা পিনোচেট বামপন্থী প্রেসিডেন্ট সালভাদর আলেন্দেকে উৎখাত করায় ও তাঁর রহস্যজনক মৃত্যুর হওয়ার কথা রাজনৈতিক ইতিহাসে কতভাবেই না আলোচিত হয়। আর কবি পাবলো নেরুদাকে তো মনে হয় আমাদের সাহিত্য পরিমণ্ডলেরই কেউ। এই দেশটি যে ফুটবল খেলে, সেটাকে হালকা করে দেখাটা ভুল হবে। ফুটবল ইতিহাসের অনেক পুরনো মুখ চিলি। শুরু থেকেই খেলে আসছে বিশ্বকাপ ফুটবলে। বিশ্বকাপ ফুটবলে দেশটির অস্তিত্ব সরব হয়ে না উঠলেও উপস্থিতি কিছুটা হলেও টের পাওয়া যায়। তবে বড় কোনো সাফল্য না থাকার কারণে দলটি আলাদাভাবে মনোযোগ কাড়তে পারেনি

এই ব্রাজিল সেই ব্রাজিল নয় / দুলাল মাহমুদ

ছবি
নিদ্রাদেবীকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে একবুক প্রত্যাশা নিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধনী ম্যাচ দেখলাম। স্বাগতিক ব্রাজিলের সঙ্গে খেললো ক্রোয়েশিয়া। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের সঙ্গে তুলনা করলে ক্রোয়েশিয়াকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। তবে ইউরোপীয় ঘরানার দেশ হিসেবে ‘ভ্যাটরেনি’দের তেজদীপ্ততা, শক্তিমত্তা ও কৌশলকে উপেক্ষা করার সুযোগও নেই। যে কোনো অঘটন ঘটানোর ক্ষমতা তাদের আছে। সঙ্গত কারণে লাতিন আর ইউরোপীয় ঘরানা পরস্পর বিরোধী হলেও তুমুল একটা লড়াই অপ্রত্যাশিত ছিল না। ক্রোয়েশিয়া ফেবারিট না হলেও লড়াকু দল হিসেবে তাদেরকে সমীহ না করার কোনো কারণ নেই। কিন্তু সকল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল শৈল্পিক ফুটবলের প্রতিনিধি ব্রাজিল। ষষ্ঠবারের মতো বিশ্ব শিরোপা জয়ের সংকল্প তাদের। সেই লক্ষ্য নিয়ে ৬৪ বছর পর নিজের মাঠে খেলতে নামে ‘সেলেকাও’রা। পরিচিত মাঠ ছাড়াও গ্যালারি ভর্তি সমর্থক আর অনুকূল পরিবেশে ব্রাজিলকে স্বমহিমায় দেখতে পাওয়াটা ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু এ কোন ব্রাজিলকে দেখলাম? লিওনিদাস দা সিলভা, নিলটন সান্তোষ, দিদি, গ্যারিঞ্চা, পেলে, গারসন, কার্লোস আলবার্তো তোরেস, জইরজিনহো, রবার্তো রিভেলিনো, টোস্টাও, জ

আগ্রাসী মানসিকতাই জার্মানদের চাবিকাঠি / দুলাল মাহমুদ

ছবি
শ্বেত-শুভ্র জার্সিতে বোঝা যায় না, ভিতরে ভিতরে জার্মানরা কত কঠিন, কত অনমনীয়, কত নির্মম হতে পারে। যখন তাঁরা খেলতে নামে, তখন অনুধাবন করা যায় তাঁদের জাত্যাভিমান কতটা প্রবল, তাঁদের জাতীয়তাবাদ কতটা তীব্র, তাঁদের আগ্রাসী মানসিকতা কতটা ভয়ঙ্কর। আর ফুটবল মাঠটাকে বরাবরই তাঁরা যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবেই বিবেচনা করে এসেছে। এর পেছনে কাজ করছে তাঁদের অন্যরকম হিসেব। প্রত্যক্ষভাবে হয়তো তাঁদের এই মনোভাবের প্রতিফলন বোঝা যাবে না। কিন্তু গভীরভাবে তলিয়ে দেখলে তাদের এই ‘কিলার ইনসটিংকট’ বা খুনে প্রবৃত্তি স্পষ্ট হয়ে উঠে। কেউই তো আর পরাজয়টাকে সহজে মেনে নিতে চায় না। পরাজয়ের বেদনা সারা জীবনই কুরে কুরে খায়। আর একটি জাতির পরাজয়ের বেদনা চলতে থাকে অনন্তকাল। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হার মানলেও জার্মানদের বুকের ভিতরে পরাজয়ের এই কষ্ট, এই বেদনা তুষের আগুনের মতো ধিকি ধিকি করে জ্বলে। জ্বলারই কথা। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোনো পথ নেই। কেননা, ইতিহাস তো আর মুছে ফেলা যায় না। তবে সাময়িক একটা উপশম যদি পাওয়া যায়, তাতে মন্দ কি, এমন একটা ভাবনা তাঁদের পেয়ে বসে। তাই ‘বিশ্বব্যাপী আধিপত্য’ প্রতিষ্ঠা আর ‘পরাজয়ের প্রতিশোধ’ নেওয়ার জন্য জার্ম

মেসিকে নিয়ে আশা, মেসিকে নিয়ে আশঙ্কা / দুলাল মাহমুদ

ছবি
বিশ্ব ফুটবলের কোন দলটি বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি দেখে অনুধাবন করা যায়, ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনার যে কোনো একটি দল হবে। অনুধাবন কেন এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। এই মুহুর্তে বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্তে এক চক্কর ঘুরে আসলেই যে কেউ এর সদুত্তর পেয়ে যাবেন। অধিকাংশ এলাকায় আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের জাতীয় পতাকা সগৌরবে উড়ছে কিংবা এই দুই দেশের জার্সি গায়ে কেউ না কেউ মনের আনন্দে ঘুরছেন। কোথাও কোথাও এই দুই দলকে নিয়ে আঁকা হয়েছে দেওয়াল চিত্র। তবে দীর্ঘ একটা সময় কালো মানিক পেলে, প্রতিভার বরপুত্র গ্যারিঞ্চার মতো শিল্পী ফুটবলার আর শৈল্পিক ফুটবলের কারণে এ দেশে ব্রাজিলের একচেটিয়া সমর্থন ছিল। সে সময় তাদের কোনো শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ছিল না বললেই চলে। কিন্তু দিয়াগো ম্যারাডোনা নামের একজন অতিমানবীয় ফুটবলারের বিস্ময়কর নৈপুণ্যে ও অধিনায়কত্বে ১৯৮৬ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপ ফুটবলে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হলে ব্রাজিলের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়। আর একইসঙ্গে পেলের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেন ম্যারাডোনা। বিশেষ করে, সেবারের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে চাতুর্যের সঙ্গে করা প

ফুটবলের সৌন্দর্য, সৌন্দর্যের ফুটবল / দুলাল মাহমুদ

ছবি
শিল্পিত ফুটবল এবং সৌন্দর্য যেন একে অপরের পরিপূরক। আর শিল্পকলার সারকথাই তো সৌন্দর্য। যা দেখে মানুষ আনন্দিত হয়, যে সৌন্দর্য মুগ্ধ করে, বুকের মধ্যে হয় অন্যরকম অনুভূতি, নিরন্তর খোরাক যোগায় ভাবনার, সেটাই তো শিল্পকলার সারকথা। এ বিবেচনা থেকে বলা যায়, ফুটবল খেলা তো শিল্পকলারই নামান্তর। বরং এটি অন্য যে কোনো পারফরমিং আর্ট থেকে অনেক বেশি আকর্ষণীয়, অনেক বেশি উজ্জ্বল, অনেক বেশি আনন্দদায়ক। ফুটবল খেলা জীবন্ত ও প্রাণশক্তিতে ভরপুর তো বটেই, বিনোদন হিসেবেও অতুলনীয়। ফুটবলে সৌন্দর্য ও সৃজনশীলতা প্রকাশের ক্ষমতা ও দক্ষতা প্রশ্নাতীত। চোখের পলকে তাৎক্ষণিকভাবে ফুটবল মাঠে শৈল্পিক সৌন্দর্য দিয়ে উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করা জাতশিল্পী ছাড়া সম্ভব নয়। সাহিত্য, সংগীত, চলচ্চিত্র, নৃত্য, চিত্রকলা, ভাস্বর্যের মতো ললিতকলা ও শিল্পকর্মও জীবনধর্মী। তবে ফুটবলের আবেদন ও শিল্পকুশলতা ব্যতিক্রমধর্মী। ফুটবল খেলা এমন একটি শিল্পকলা, যার মাধ্যমে দর্শকদের সঙ্গে সরাসরি যোগসূত্র স্থাপিত হয়। খেলা চলার সময় প্রতিটি ক্ষণেই অনুভব করা যায় দর্শকদের আবেগ-উচ্ছ্বাস, আনন্দ-বেদনা, আশা-নিরাশা, ক্ষোভ-যন্ত্রণা, পাওয়া-না পাওয়ার আহাজারি। ২২ জন খেলোয়াড়

কমলা রঙের উৎসবের অপেক্ষায় / দুলাল মাহমুদ

ছবি
যাঁরা  লাতিন ঘরানার দৃষ্টিনন্দন ‘দ্য বিউটিফুল গেম’-এর অনুরাগী, তাঁদের কাছে অনেকটা অচ্ছুৎ হয়ে আছে ইউরোপীয় ঘরানার ফুটবল। তাঁদের উপলব্ধি হলো, ফুটবল খেলায় যদি চোখের সৌন্দর্য, মনের সুখ আর অন্তরের তৃপ্তি না পাওয়া যায়, তাহলে ফুটবল খেলায় কেন মুগ্ধ হওয়া? ফুটবল খেলায় বিনোদনই প্রধান। বিনোদনের উৎস হলো সুর, ছন্দ, শিল্প, সৌন্দর্য। আর ফুটবলেই তো এসবই দেখতে চায় ফুটবল রসিকরা। এ কারণে সৌন্দর্যপিয়াসীদের কাছে ইউরোপীয় রক্ষণাত্মক ও পাওয়ারফুল ফুটবল পছন্দ না হওয়ারই কথা। কিন্তু ইউরোপীয় ঘরানার দেশ হলেও নেদারল্যান্ডসকে কেন জানি ব্যতিক্রম মনে হয়। তাদের খেলায় ইউরোপীয় খেলার ধার ও ধারা থাকলেও তাতে দেখতে পাওয়া যায় টিউলিপ ফুলের সৌন্দর্য। তাতে হয়তো লাতিন ঘরানার ছন্দোময় ও শৈল্পিক ফুটবলের মতো মন-প্রাণ দুলে উঠে না। তবে একটা ভালো লাগার অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে বুকের মধ্যে। বিশ্ব ফুটবলে হল্যান্ড কখনোই ফেলনা কোনো দল নয়। ‘দ্য ফ্লাইং ডাচম্যান’রা কখনো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও তাদের ফুটবলশৈলী দর্শকদের মন জয় করে নিতে পেরেছে। সেরা নৈপুণ্য, সেরা ফুটবলার কম উপহার দেয়নি তারা। বিশ্বকাপ ফুটবলে তিনবার ফাইনাল, চারবার সেমি-ফাইনাল, পাঁচব