পোস্টগুলি

জুলাই ৩, ২০১১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

কোরানের ব্যাটে ছিল অগ্নিস্ফুলিঙ্গ/ দুলাল মাহমুদ

ক্রিকেটার হিসেবে তার মধ্যে ছিল দ্বৈতসত্তা। কখনো তিনি ছিলেন আগ্রাসী ব্যাটসম্যান, কখনো তিনি সৌন্দর্যের উপাসক। ব্যাট হাতে নামার পর তিনি হয়ে উঠতেন অপ্রতিরোধ্য ও বেপরোয়া। তার ব্যাটে ছিল আগুনের স্ফুলিঙ্গ। যে কোনো বলকেই সীমানার বাইরে আছড়ে ফেলতেন অনায়াস ও সাবলীল দক্ষতায়। আবার তার মধ্যেই ছিল শিল্পীত একটি মন। তার কভার ড্রাইভ ছিল চেয়ে দেখার মতো। যেন শিল্পীর তুলির নিখুঁত আঁচড়। স্কোয়ার কাট, অন ড্রাইভগুলো ছিল চমৎকার। তবে আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান হিসেবেই তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। সেই পঞ্চাশ ও ষাট দশকে ক্রিকেট ছিল ক্ল্যাসিকাল ঘরানার। তাতে ছিল বনেদীয়ানার ছাপ। একটু মন্থর। আর এই মন্থরতার বিপক্ষে ক্রিকেটে গতি নিয়ে আসেন সৈয়দ আবদুল মজিদ কোরান। তিনি তার দীপ্তি দিয়ে, সৌন্দর্য দিয়ে ক্রিকেটে আলাদা স্থান করে নেন। হাল আমলের টোয়েন্টি টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে যখন রানের ফুলঝুরি ছোটে, তখন কোরানের স্মৃতিতে ভেসে ওঠে তার সময়ের দিনগুলো। টেস্ট ক্রিকেটের সেই দিনগুলোতে তিনি ছিলেন সময়ের চেয়ে অনেক অগ্রগামী। তার ব্যাটে ছিল টোয়েন্টি টোয়েন্টি কিংবা ওয়ানডে ক্রিকেটের দুরন্ত ঝড়। তিনি যখন খেলতে নামতেন, দর্শকরা তখন নড়েচড়ে বসতেন। ত

লিফটার কানুর হাতে ছিল ম্যাজিক-টাচ/ দুলাল মাহমুদ

ভলিবল মাঠকে কেন্দ্র করে আবর্তিত তার জীবন। জীবন ধারণের প্রয়োজনে একটা কর্মজীবন বেছে নিতে হলেও তার মন পড়ে থাকে ভলিবল মাঠে। মাঠে না এলে তিনি স্বস্তি পান না। স্টেডিয়াম পাড়ায় যাদের নিয়মিত আসা-যাওয়া, তাদের কাছে দৃশ্যমান হয় তার সরব উপস্থিতি। সংগঠক হিসেবে তিনি ভলিবলের কোনো না কোনো কর্মকান্ডে জড়িয়ে থাকেন। হয় ফেডারেশন নতুবা ক্লাবকেন্দ্রিক। ভলিবলের গন্ডির বাইরে যাওয়ার কথা তিনি কখনো চিন্তা করেননি। খেলোয়াড় হিসেবেও তিনি ছিলেন তুখোড়। তার ক্রীড়াশৈলী এখনও অনেককে আপ্লুত করে। তবে তাকে দেখলে মনে হবে না খেলার মাঠকে তিনি আলোকিত করে রাখতেন। ছোটখাট গড়ন। এমন দৈহিক কাঠামো নিয়েও যে ভলিবল কোর্ট মাতিয়ে রাখা যায়, তার চমৎকার দৃষ্টান্ত মোঃ খায়রুল ইসলাম মোল্লা। এই নামে তিনি খুব বেশি পরিচিত নন। খেলার মাঠে সবাই তাকে চেনেন কানু নামে। নিয়তি যেন কানুকে ভলিবল খেলার সঙ্গে জড়িয়ে ফেলে। একদম শৈশবে তিনি ভলিবলে আকৃষ্ট হন। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ তাকে হাতছানি দিয়ে ডেকে নিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামটাই ছিল ভলিবল গ্রাম। গ্রামের শেষ মাথায় ছিল খালি জায়গা। আর ছিল বাঁশের খুঁটি, নেট ও মুখ সেলাই করা চামড়ার বল। ব্যস, আর কি চাই

হকির পরিচিত মুখ শামসুল বারী/ দুলাল মাহমুদ

বাংলাদেশের হকি অঙ্গনে সুপরিচিত মুখ শামসুল বারী। সবাই তাকে চেনেন হকি সংগঠক হিসেবে। দীর্ঘদিন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকায় তাকে সংগঠক হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। যে কারণে তার খেলোয়াড়ী জীবন অনেকটাই আড়াল পড়ে গেছে। অথচ একসময় তিনি খেলোয়াড় হিসেবে ছিলেন সমীহ জাগানো নাম। হকির ফুলব্যাক হিসেবে খেলেছেন দাপটের সঙ্গে। খেলোয়াড় ও সংগঠক হিসেবে টানা প্রায় সাড়ে চার দশক হকির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে আছেন। এমনটি সাধারণত দেখা যায় না। এ দেশের হকির নাড়ী-নক্ষত্র তার জানা। কাছ থেকে দেখেছেন হকির উত্থান-পতন। দুই ক্ষেত্রেই তার ভূমিকাকে অস্বীকার করা যাবে না। হকির সঙ্গে শামসুল বারীর সম্পর্ক আরমানিটোলা স্কুলের সুবাদে। থাকতেন বেচারাম দেউরীতে। বাসা থেকে পায়ে হাঁটা দূরত্বে ছিল স্কুল। স্কুল সময় বটেই, অন্য সময়ও ছুটে আসতেন আরমানিটোলা স্কুলে। খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে স্কুলের অবদানই বেশি। খেলাধুলায় স্কুলের সাফল্য ও ঐতিহ্য, সার্বিক পরিবেশ তাকে টেনে নেয় খেলার মাঠে। তবে তার শুরুটা ছিল ক্রিকেটে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘স্কুলে ক্রিকেট ও হকি দুই-ই খেলতাম। তবে ক্রিকেটে আকর্ষণটা ছিল বেশি। স্কুল টিমে প্রতিনিধ

বাস্কেটবলের বুলবুল/ দুলাল মাহমুদ

একটা সময় বাস্কেটবল যে বেশ জনপ্রিয় খেলা ছিল, সেটা এখন আর অনুধাবন করা যাবে না। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বাস্কেটবলের ব্যাপক চর্চা ছিল। বাস্কেটবলের সেই সুদিন এখন আর নেই। তার সোনালী দিনগুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। বাস্কেটবল খেলা তার জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেললেও হারিয়ে যাননি মাহতাবুর রহমান বুলবুল। বাস্কেটবল ও বুলবুল যেন একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বাস্কেটবল বললেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠেন তিনি। বাস্কেটবলের সঙ্গে তার আত্মিক সম্পর্ক। দীর্ঘদিন বাস্কেটবল খেলেছেন,তার চেয়ে বেশিদিন আছেন কোচ হিসেবে। তাছাড়া কোনো না কোনোভাবে বাস্কেটবলের সঙ্গে রয়েছে তার নিবিড় যোগাযোগ। তার জীবনের বড় সময়টাই কেটেছে বাস্কেটবলের সান্নিধ্যে। আপাদমস্তক তিনি বাস্কেটবলের লোক। বাস্কেটবলকে বাদ দিয়ে তিনি অন্য কিছু চিন্তা করতে পারেন না। মাহতাবুর রহমান বুলবুলের রক্তেই রয়েছে খেলাধুলা। তার পিতা ছিলেন খ্যাতিমান ক্রীড়াব্যক্তিত্ব মাসুদুর রহমান। প্রথম জীবনে কলকাতা মোহনবাগানে হকি ও ফুটবল খেলেছেন। পশ্চিমবঙ্গে ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। দেশভাগের পর তিনি ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের হয়ে খেলেছেন। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান স্প

বহুদর্শী ক্রীড়াবিদ মনিরুল হক/ দুলাল মাহমুদ

খেলাধুলাটা এক ধরনের নেশার মতো। কেউ ঘনিষ্ঠভাবে এর সংস্পর্শে এলে তার বন্ধন কাটানো সহজে সম্ভব হয় না। দূরে সরে গেলেও বুকের মধ্যে কোথাও না কোথাও তার রেশ থেকেই যায়। আবার কেউ কেউ জীবনটাই কাটিয়ে দেন খেলার মাঠে। ক্রীড়াঙ্গন থেকে সরে থাকতে পারেন না। এটা তাদের জীবনযাপনের অংশ হয়ে দাঁড়ায়। কখনো খেলোয়াড় হিসেবে, কখনো রেফারি হিসেবে, কখনো কোচ হিসেবে কিংবা কখনো সংগঠক হিসেবে জড়িয়ে থাকেন খেলাধুলার সঙ্গে। কোনো না কোনোভাবে মাঠের সঙ্গে সম্পর্কটা অটুট রয়েই যায়। যে কারণে ক্রীড়াঙ্গনে কিছু মুখ আছেন, যারা চিরপরিচিত। ক্রীড়াঙ্গনে একটুখানি ঢুঁ মারলে তাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়েই যায়। ক্রীড়াপ্রেমী এই মানুষগুলো আছেন বলেই ক্রীড়াঙ্গন সরগরম থাকে। ক্রীড়ায় নিবেদিতপ্রাণদের এমন একজন মোঃ মনিরুল হক। ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে মনিরুল হকের সম্পর্ক অর্ধশতাব্দী কালেরও বেশি। জীবনের শুরুতেই সেই যে খেলাধুলার সঙ্গে নিবিড় বন্ধন গড়ে তুলেছিলেন, তা আজও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। যতই দিন গেছে, ঘনিষ্ঠতা ততই বেড়েছে। আসলে সেই শৈশবে তার বুকে খেলাধুলার বীজ বপন করে দেন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের গেমটিচার কামিনী বাবু। সেই বীজ তিনি নিষ্ঠা ও ভালোবাসার সঙ্গে প্রতিপালন

অ্যাথলেটিকসের উজ্জ্বল মুখ মীর শরীফ হাসান/ দুলাল মাহমুদ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির শহর হিসেবে সুখ্যাতি কুষ্টিয়ার। এ নামটি উচ্চারিত হলেই বুকের মধ্যে বেজে ওঠে লালনগীতি। শুধু সাংস্কৃতিক দিক দিয়েই নয়, ক্রীড়াক্ষেত্রেও একটা সময় কুষ্টিয়ার ছিল গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্য। বিশেষ করে অ্যাথলেটিক্স অঙ্গনে কুষ্টিয়া থেকে উঠে এসেছেন জাতীয় পর্যায়ের দেশবরেণ্য অনেক অ্যাথলেট। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ঝলমল করেছে তাদের পারফরম্যান্সে। এই কৃতী অ্যাথলেটদের একজন হলেন মীর শরীফ হাসান। ষাট ও সত্তর দশকের অ্যাথলেটিকসের উজ্জ্বল এক মুখ। অ্যাথলেটিকসের সঙ্গে তার মেলবন্ধন সেই শৈশবে। গতির মধ্যেই ছিল তার আনন্দ। লাফ-ঝাঁপ কিংবা দুরন্ত গতিতে ছুটে চলার মধ্যে তিনি খুঁজে পেতেন জীবনের স্পন্দন। অল্প বয়সেই অ্যাথলেটিকসের প্রতি তিনি আকৃষ্ট হন। প্রথম জীবনের স্মৃতি এখনও আপ্লুত করে তাকে, ‘আমি ছিলাম কুষ্টিয়া মুসলিম স্কুলের ছাত্র। পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই জড়িয়ে পড়ি খেলাধুলায়। শুরুতেই অ্যাথলেটিকসের প্রেমে পড়ে যাই। এর কারণ, কুষ্টিয়া স্কুলের পরিবেশ। এই স্কুলটি ছিল অ্যাথলেটিকস গড়ার নন্দনকানন। খন্দকার আবুল হাসান, কাজী আলমগীর, জেমস জয় মল্লিকের মতো খ্যাতিমান অ্যাথল