পোস্টগুলি

নভেম্বর ৬, ২০১৬ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

স্বপ্ন আছে বাস্তবায়ন নেই

ছবি
আমরা বাংলাদেশের মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। আর এই স্বপ্নের পরিধি বোধকরি আকাশের থেকেও বড়। যে কারণে বড় বড় বিষয় নিয়ে মেতে থাকতেই আমরা পছন্দ করি। ছোট-খাট বিষয় নিয়ে খুব একটা আগ্রহ নেই। এমনকি নিজের দেশকে অবহেলা করতেও খুব একটা দ্বিধা হয় না। এই তো কয়েক দিন আগে অনুষ্ঠিত হলো ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবল। ফুটবলের এই মহোৎসবের সঙ্গে বাংলাদেশের দূরত্ব যোজন যোজন। তাতে কি? বিশ্বকাপে বাংলাদেশ না থাকুক, বিশ্বকাপ নিয়ে স্বপ্ন দেখতে তো বাধা নেই। এ কারণে ‘দ্য গ্রেটেষ্ট শো অন আর্থ’ নিয়ে বাংলাদেশে উন্মাদনার কোনো কমতি ছিল না। বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী প্রায় প্রতিটি দলেরই কম-বেশি সমর্থক বাংলাদেশে আছে। আর ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনাকে নিয়ে বাংলাদেশে তাঁদের অনুরাগীরা যা করেন, তার কোনো তুলনা চলে না। এই দুই দেশের যত পতাকা বাংলাদেশে উড়েছে, তত পতাকা ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনায়ও উড়ে না। বিশ্বকাপ নিয়ে এ দেশের মানুষের এই যে স্বপ্ন, এরসঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তবুও স্বপ্ন কিন্তু থেমে নেই। ফুটবল অনুরাগীরা তো ভালো ফুটবলের সমঝদার হিসেবেই নিজেদের দাবি করেন। এ কারণে তাঁরা বিশ্বকাপ, ইউরোপীয় লিগের মতো বড় বড় আসর নিয়েই মেতে থাকেন। দেশের ফ

ফুটবল মাঠের অন্য এক লড়াই

ছবি
পৃথিবীর ইতিহাসে যা কখনো ঘটেনি, তেমন বিস্ময়কর এক নজির স্থাপন করেছেন ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ। খেলার মাঠও যে স্বাধীনতা সংগ্রামের পাদপীঠ হয়ে উঠতে পারে, সেটা তাঁরা বাস্তবিকই বুঝিয়ে দিয়েছেন। ফুটবল মাঠে মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামীরা। খেলার মাঠের এই বিমূর্ত স্বপ্ন ত্বরান্বি^ত করেছে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আর এ কারণেই ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টের আগেই ১৯১১ সালের ২৯ জুলাই মুক্তির আনন্দে উল্লসিত হয় অবিভক্ত ভারতের মুক্তিপাগল ভারতীয়রা। সেদিন সাহেবদের দল ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টকে ২-১ গোলে হারিয়ে উপমহাদেশের প্রথম দল হিসেবে আইএফএ শিল্ড জয় করে মোহনবাগান ক্লাব। এটি ছিল জয়ের চেয়েও বড় কিছু। ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে এই প্রথম বাঙালিদের নিয়ে গড়া ভারতীয় একটি দল ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর তুখোড় দলগুলোকে হারিয়ে ওড়ায় বিজয়ের পতাকা। চাঞ্চল্যকর এই বিজয়ে ভারতজুড়ে সৃষ্টি হয় অভাবনীয় উচ্ছ্বাস আর উদ্দীপনা। এটি পরিণত হয় সর্বজনীন এক মুক্তির উৎসবে। ফুটবল হয়ে ওঠে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার। প্রতিনিয়ত ব্রিটিশদের কাছে নাজেহাল হওয়া ভারতীয়দের কাছে এটি ছিল জাতির মুক্তির সনদ।

মাটির বিশ্বকাপ মানুষের বিশ্বকাপ

ছবি
পৌষের হিম সন্ধ্যা। সূর্য তখন ডুবে গেছে। ঝুপ করে অন্ধকার নেমে এসেছে শিশিরভেজা গ্রামীণ জনপদে। কিশোরগঞ্জের দিকে চলে গেছে ব্যস্ত একটি সড়ক। তারই বুক চিরে হুট করে ডানদিকে নেমে গেছে পিচঢালা মসৃৃণ পথ। স্থানীয় জনগণের ভালোবাসায় ধন্য এই রাস্তাটির নামকরণ করা হয়েছে কৃষি উন্নয়ন ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের নামে। রাস্তাটির কোল ঘেঁষে চরপুলিয়ামারী গ্রাম। ময়মনসিংহ থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের শম্ভুগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামটি সেদিন হয়ে ওঠে অন্যরকম। চারপাশ আলোয় আলোয় আলোকিত। বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে গ্রামটি সরগরম। জমজমাট। সেই বিকেল থেকে একটি মাঠকে কেন্দ্র করে সুশৃঙ্খলবদ্ধ হয়ে অধীর অপেক্ষায় আশপাশের গ্রাম থেকে ছুটে আসা হাজারো মানুষ। তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। গাছের ডালেও ঝুলতে থাকেন উৎসাহীরা। কারোরই আগ্রহের একটুও কমতি নেই। কনকনে শীতকে পাত্তা না দিয়ে ছুটে এসেছেন সেই দূর-দূরান্ত থেকে। সব বয়সী মানুষ। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা উপেক্ষা করেছেন ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতল হাওয়াকে। কেউ চাদরে জড়িয়ে, কেউবা এসেছেন সোয়েটার ও মাঙ্কি টুপি পরে। কারো মুখে পান। আমন ধান কাটার পর সবার মনেই আনন্দের রেশ। চারপাশে নবান্নের

ক্লান্তিকর ক্রিকেট, বিরক্তিকর ক্রিকেট

ছবি
ক্রিকেটটা যখন দূরের ছিল, তখন এক ধরনের রোমান্টিকতা ছিল। এখন ক্রিকেটটা হাতের মুঠোয় চলে আসায় সেই রোমান্টিকতা যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। বরং এত বেশি ক্রিকেটের ঠেলায় ‘ত্রাহি মধুসুদন’ দশা। গ্রীষ্মে ক্রিকেট, বর্ষায় ক্রিকেট, শরতে ক্রিকেট, হেমন্তে ক্রিকেট, শীতে ক্রিকেট, বসন্তেও ক্রিকেট। একটুও দম ফেলার ফুসরত নেই। বছরভরই লেগেই আছে ক্রিকেটের মচ্ছব। এমনকি সকাল নেই, দুপুর নেই, রাতও নেই। দিনের পুরোটা সময় এখন ক্রিকেটময়। টিভি খুললেই ক্রিকেট। সংবাদপত্রের পাতা উল্টালেও ক্রিকেট। চলতি পথে ক্রিকেট। ফিরতি পথেও ক্রিকেট। জীবন যাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ক্রিকেটের অবাধ বিচরণ। ‘ইট ক্রিকেট, স্লিপ ক্রিকেট, লিভ ক্রিকেট’ এখন আর বিজ্ঞাপনের ভাষায় সীমাবদ্ধ নেই। প্রকৃতঅর্থেই খেতে হচ্ছে ক্রিকেট, ঘুমাতে হচ্ছে ক্রিকেটে, বসবাস করতে হচ্ছে ক্রিকেটে। অধিক মুনাফার আশায় ক্রিকেটের এই অতিভোজ অতিষ্ঠ করে তুলেছে জীবন। কারো কারো কাছে অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে, ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’। তারপরও কিন্তু রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রিকেটের আগ্রাসী প্রভাবে বদলে যাচ্ছে সামাজিক জীবনও। অথচ সেদিন তো বেশি দূরে নয়, যখন ক্রিকেট খেলা হতো কালেভদ্রে। কম খে

কাছের মানুষ এখন অনেক দূরে

ছবি
কাছের কোনো মানুষ চলে গেলে বুকের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সৃষ্টি হয় বিশাল এক শূন্যতা, তখন কোনো কিছূতে মন বসানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রতিদিনের জগতটা কেমন জানি উলোট-পালট হয়ে যায়। এমনিতেই পরিপার্শ্বটা মুড়ানো থাকে শোকের চাদরে। তার সঙ্গে যোগ হয় কেমন জানি একটা গুমোট ও অস্বস্থিকর পরিস্থিতি। বিক্ষিপ্ত মনটা উড়তে থাকে শ্রাবণের মেঘ হয়ে। কোনো কিছুতেই পাওয়া যায় না স্বস্থি ও সুস্থিরতা। বুকের মধ্যে জমাট বাধে ঘন কুয়াশার আস্তরণ। হঠাৎ হঠাৎ অকারণে ভিজে যায় চোখ। বাষ্পরুদ্ধ হয়ে যায় কণ্ঠ। কেমন যেন এক ঘোরলাগা জীবন যাপন। খাচ্ছি, দাচ্ছি, ঘুমাচ্ছিও। কিন্তু কোথায় যেন কেটে যায় তাল-লয়-সুর। যখনই মনে পড়ে যায় শূন্যতার কথা, সব কিছুই মনে হয় এলোমেলো। ছন্দহীন। জীবনের মধ্যে থেকেও যেন অন্য এক জীবন যাপন। এমন একটা অবস্থায় চিরতরে চলে যাওয়া নিকটজনকে নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কিছু লেখা কঠিনতম এক কাজ। এ সময় কোনো যথাযথ শব্দ বা বাক্য মস্তিক্সে ধরা দেয় না। একটা আচ্ছন্নতা ও ধুয়াশার মধ্যে কাটে জীবন। এমন এক প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে লেখার দুরূহ দায়িত্ব নিয়ে আমি সত্যিই দিশেহারা। অথৈই জলে হাবুডুবু খাচ্ছি। কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছি না। তার দৈহিক অনুপ