পোস্টগুলি

জুন ৫, ২০১১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আপন ভুবনের রাজা কাজী কামাল/ দুলাল মাহমুদ

বাঙালির ইতিহাসে একাত্তর অমলিন। সে ছিল বাঙালির জন্য চরম এক অগ্নিপরীক্ষা। আর এই পরীক্ষায় জীবনবাজি রাখেন বাংলার মানুষ। সে সময় খেলার মাঠ ও যুদ্ধের মাঠ হয়ে যায় একাকার। তবে জাতীয় পর্যায়ে খেলাধুলায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন- এমন ক্রীড়াবিদের সংখ্যা খুব বেশি নেই। তাছাড়া পাকিস্তান আমলে বাঙালি কোনো ক্রীড়াবিদের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াটা ছিল অসম্ভব এক চাওয়া। ফুটবল, সাঁতারের মতো খেলায় যা হোক বেশ কয়েকজন সুযোগ পেয়েছেন, অন্যান্য খেলায় তা পাওয়া ছিল বিস্ময়কর ঘটনা। বাস্কেটবলের মতো পশ্চিম পাকিস্তানের নিরঙ্কুশ আধিপত্যের খেলায় জাতীয় দলের ট্রায়ালে ডাক পেয়েছিলেন বাঙালি খেলোয়াড় কাজী কামালউদ্দিন আহমেদ। একজন বাঙালি বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের জন্য যা ছিল রীতিমত স্বপ্নের ব্যাপার। অথচ এই স্বপ্নের পথে তিনি হাঁটেননি। জাতীয় দলের ট্রায়ালে ডাক পাওয়ার প্রলোভন দু’হাতে সরিয়ে দিয়ে যুদ্ধের ময়দানে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে নিজেকে উৎসর্গ করার চেয়ে আর কোনো কিছুই তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়নি। মা, মাটি ও মাতৃভূমি যার বুকের গভীরে আঁকা চিরস্থায়ীভাবে, তার পক্ষে জীবনবাজি রাখা অসম্ভব কিছু নয়। পূর্ব

জীবনের গতির কাছে পরাস্ত অ্যাথলেট কাজী আলমগীর!/ দুলাল মাহমুদ

অলিম্পিকের যে মটো ‘সিটিয়াস, অলটিয়াস, ফর্টিয়াস’ তার মূল আকর্ষণ কিন্তু অ্যাথলেটরা। সেই প্রাচীনকাল থেকেই অ্যাথলেটদের দেখা হয় সমীহর চোখে। হরিণের মত দুরন্ত গতিতে ছুটে চলার মধ্যে যে সম্মোহন, তার কোনো তুলনা হয় না। গতিটা যেহেতু খেলাধুলার প্রধান আকর্ষণ, সঙ্গত কারণে অ্যাথলেটিক্সকে ‘কিং অব দ্য গেমস’ বললে অত্যুক্তি হবে না। প্রায় প্রতিটি খেলায় অ্যাথলেটিক্সের সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। আর অ্যাথলেটিক্সের মাধ্যমে অনুধাবন করা যায় শারীরিক সক্ষমতা। অ্যাথলেটিক্সের যে কোনো রেকর্ডই দুনিয়াজোড়া আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়। সময়কে পেছনে ফেলে মানুষ কতটা পথ পাড়ি দিল, তার মানদন্ড অ্যাথলেটদের এই রেকর্ড। তদুপরি গতি, শক্তি ও ক্ষমতা দিয়ে পরিমাপ করা যায় বিশ্বের অবস্থান। দুনিয়ার পরাশক্তি হিসেবে যারা বিবেচিত হয়ে থাকে, তাদের দেশের অ্যাথলেটরাই শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে এগিয়ে। কোনো কাকতালীয় নয়, এটিকে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে বিবেচনা করা যায়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শিল্পোন্নত দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের যতটুকু পার্থক্য, ঠিক ততটাই ব্যবধান অ্যাথলেটিক্সে দূরত্বের ক্ষেত্রে। বিশ্ব তো দূরে থাকুক, এশিয়ান পর্যায়েও বাংলাদেশের কোনো অবস্থা

‘ফ্লাইং বার্ড’ বলাই দে/ দুলাল মাহমুদ

এদেশের ফুটবলের আছে সোনালী এক ইতিহাস। সেই ব্রিটিশ আমলে প্রবর্তিত ফুটবলে জন্ম নিয়েছে অনেক রত্মখচিত তারকা ফুটবলার। সেই ফুটবলারদের অনেকেই হারিয়ে যেতে বসেছেন কালের মরীচিকায়। অবশ্য বিস্মৃতিপরায়ণ জাতি হিসেবে আমরা আমাদের ইতিহাসের নায়কদের ভুলতে বসেছি। অথচ একটা সময় তাদের কীর্তির ছটায় উদ্ভাসিত হয়েছে দেশ ও দেশের মানুষ। সাতচল্লিশের দেশভাগ আর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক দেশটির অভ্যুদয় ঘটলেও ফুটবলের ইতিহাসটা যেন বিনি সুতোয় গাঁথা মালা হয়ে আছে। সেই ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায় ষাট দশক। আর এ দশকের এক ব্যতিক্রমী নায়ক বলাই দে। বলাই দে এখন বাংলাদেশের ফুটবলের এক হারিয়ে যাওয়া নাম। অথচ যাদের ক্রীড়াশৈলীতে এ অঞ্চলের ফুটবল আলোকিত হয়েছে, তিনি তাদের একজন। অবশ্য টপ ফর্মে থাকাবস্থায় ভারতে চলে যাওয়ায় বাংলাদেশে তিনি হয়ে গেছেন পরদেশী। ফুটবলে তৎকালীন পূর্ব বাংলার আধিপত্য থাকলেও পাকিস্তান জাতীয় ফুটবল দলে বাঙালি ফুটবলারদের সুযোগ পাওয়াটা ছিল সোনার হরিণ পাওয়ার মতো ঘটনা। আর সেই ‘সোনার হরিণ’-এর নাগাল যারা নিজেদের ব্যক্তিগত ক্রীড়াশৈলী ও ক্যারিশমা দিয়ে আদায় করে নিতে পেরেছেন, তাদের অন্যতম হলেন বলাই দে। শুধু

বিস্মৃতির অতলে সাঁতারু আরশাদ/ দুলাল মাহমুদ

ক্রীড়াঙ্গনটা বড্ড অদ্ভুত এক জায়গা। যতক্ষণ দ্রুত ছুটতে পারা যায়, উঁচুতে উঠতে পারা যায় এবং শক্তিশালী প্রমাণ করা যায়, ততক্ষণই থাকা যায় পাদপ্রদীপের আলোয়। আলো নিভে গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্রাস করে রাশি রাশি অন্ধকার। জীবনের এ  এক বিচিত্র নিয়ম- যতটা দেয়, আবার ফিরিয়েও নেয় ততটা। আজকের অনেক উজ্জ্বল নক্ষত্র হারিয়ে যাবেন বিস্মৃতির অন্ধকারে। তাদের কীর্তি ধূসর হয়ে আড়াল পড়ে যাবে ইতিহাসের পাতায়। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন তো আরো এক ধাপ এগিয়ে। হিরোকে জিরো বানাতে মোটেও সময় লাগে না। আবেগ, উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসায় যাকে বরণ করে নেয়া হয়, তাকে আবার দূরে সরিয়ে দিতে আমরা খুবই পারঙ্গম। কত কীর্তিমান যে সময়ের পলেস্তরায় চাপা পড়ে গেছেন, তার হদিস করা হয়ে উঠছে না। বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাওয়া এমন একজন ক্রীড়াবিদ হলেন সাঁতারু মোহাম্মদ আরশাদ হোসেন। এই প্রজন্মের অনেকেই তাকে চেনেন না। চেনার কথাও নয়। ক্রীড়াঙ্গনে এখন আর তিনি সরব নন। বেছে নিয়েছেন নিভৃতচারী এক জীবন। অথচ এদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে তার নামটি সোনার হরফে লেখা থাকার কথা। তার যে কীর্তিগাথা- তা যে কোনো বাঙালির কাছে গৌরবের স্মারক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। সেই পাকিস্তান আমলে কোনো