পোস্টগুলি

জুন ২৯, ২০১৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ভালোবাসার ব্রাজিল আর উচ্ছ্বল শাকিরা / দুলাল মাহমুদ

ছবি
বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ার্টার-ফাইনালে লাতিন ঘরানার দুই দেশ ব্রাজিল এবং কলম্বিয়া যখন মুখোমুখি হয়, তখন মনের মধ্যে দোল খেতে থাকে একরাশ দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। নিজেকেই জিঞ্জেস করতে থাকি, মন তুই কার? ব্রাজিলের নাকি কলম্বিয়ার? প্রশ্ন উঠতেই পারে কেন এই দ্বিধা? কেন এই দ্বন্দ্ব? ফুটবলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্রাজিলকে ভালো না বাসার তো কোনো কারণ নেই। ফুটবল বললেই তো ভেসে উঠে হলুদের ঢেউ খেলানো বাধ ভাঙা উদ্দাম উচ্ছ্বাস। দৃষ্টিনন্দিত ও লাবণ্যময় ফুটবলের হাতছানি। মাঠের ফুটবলের সৌন্দর্য তো আছেই, গ্যালারির ফুটবলের আকর্ষণ তো নেহাত কম নয়। এই সৌন্দর্য, এই আকর্ষণ সৌন্দর্যপিয়াসীদের আকৃষ্ট না করে পারে না। যে কারণে দুনিয়াব্যাপী  ব্রাজিলীয় ফুটবল নিয়ে উন্মাদনার শেষ নেই। পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিষয় যদি নির্ধারণ করা হয়, নিঃসন্দেহে সেই তালিকার শীর্ষেই স্থান পাবে ব্রাজিলীয় ফুটবল। যদিও সেই দূর কৈশোরে ব্রাজিলীয় ফুটবলের প্রেমে যখন অবগাহন করি, তখন তো চোখের সামনে এত কিছু ছিল না। ছিল না হলুদের প্রাণোচ্ছ্বলতা, শিল্পিত ফুটবলারের কারুকাজ কিংবা উত্তাল গ্যালারির সাম্বা নাচ। পৃথিবীর অপর পিঠের এই দেশটির কোনো কিছুই তো হৃদয়ে ছাপ ফেলার কথা নয়।

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনাল? দুলাল মাহমুদ

ছবি
বিশ্বকাপ ফুটবল উসকিয়ে দেয় আমাদের কল্পনাশক্তিকেও। এই মহোৎসবকে নিয়ে আমরা কত কিছু কল্পনা করি। বুকের মধ্যে আল্পনা আঁকি। এই কল্পনা আর আল্পনা দিয়ে কত হিসেব-নিকেশ, কত আঁকাবুকি করি। সবটাই সত্য হয়ে যায় না। আবার সবটাই মিথ্যে হয় না। কিছু মেলে। কিছু মেলে না। এবারের বিশ্বকাপ নিয়েও তেমনটি হচ্ছে। অনেকেই কল্পনা করছেন, এবারের বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলবে ব্রাজিল এবং আজেন্টিনা। অতীতে কখনো ফাইনালে মুখোমুখি হয়নি ফুটবলের প্রবল প্রতিপক্ষ এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু কিছু সমীকরণ যদি মিলে যায়, এবারের তেমন একটা উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। সেটা যদি হয়, তাহলে উল্লসিত হবেন ফুটবল অনুরাগীরা। ফুটবল দুনিয়ার সমর্থক গোষ্ঠী মূলত এই দু’টি দেশকে কেন্দ্র করে বিভক্ত। এই দুই দেশের যত সমর্থক ও অনুরাগী আছে, আর কোনো দেশের সেটা নেই। তৃতীয় বিশ্বে এই দুই দেশের একচেটিয়া জনপ্রিয়তা। আমাদের দেশে সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বায়ন হলেও এখনও ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনাকে ছাড়িয়ে যাওয়া দূরে থাকুক, তাদের কাছাকাছিও যেতে পারেনি কোনো দেশ। লাতিন আমেরিকার এই দুই দেশকে সমর্থন দেওয়াকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে কত কিছুই না ঘটে। এমনকি মনোমালিন্য, তা থেকে ত

স্বপ্নের পথ আর কত দূর? দুলাল মাহমুদ

ছবি
কত অপেক্ষা নিয়ে আসে এক একটি বিশ্বকাপ। চার বছরের অপেক্ষা। ৪৮ মাসের অপেক্ষা। ১৪৬০ দিনের অপেক্ষা। অঞ্জন দত্তের গানের মতো, ‘এত দিন ধরে এত অপেক্ষা’। এই অপেক্ষার রঙও আলাদা আলাদা। কারো অপেক্ষা বিশ্বকাপ ফুটবলে চূড়ান্ত পর্বে খেলা। কারো অপেক্ষা চূড়ান্ত পর্বে চমক সৃষ্টি করা। কারো অপেক্ষা বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আর এজন্য দিনের পর দিন কত প্রস্তুতি। কত অনুশীলন। কত ঘাম ঝরানো। শুধু কি তাই? নতুন নতুন কৌশল। নতুন নতুন উদ্ভাবনা। নতুন নতুন চিন্তা-ভাবনা। একটি দলকে গড়ে তুলতে চলে কত রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা। আর এ সব কিছুর প্রতিফলন ঘটে বিশ্বকাপ ফুটবলে। এ ক্ষেত্রে কারো স্বপ্ন পূরণ হয়। কারো স্বপ্ন রয়ে যায় অপূর্ণ। আর কেউ কেউ স্বপ্ন আর দুঃস্বপ্নের মাঝে দোল খেতে থাকে। ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবল এখন কোয়ার্টার-ফাইনাল রাউন্ড শুরুর অপেক্ষায়। অনেক স্বপ্ন নিয়ে চূড়ান্ত পর্বে খেলতে এসেছিল ৩২টি দেশ। প্রথম রাউন্ড থেকেই ঝরে যায় ১৬টি দেশ। যদিও খেলার নিয়মই তো এমন, কেউ জিতবে। কেউ হারবে। তারপরও এই হার-জিতের মধ্যেই থাকে কত আশা-নিরাশার প্রতিচ্ছবি। এবার প্রথম খেলতে আসা বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার স্বপ্ন ছিল একরকম। পুরনো দেশগুলোর স্বপ

বিশ্বের পরাশক্তি বিশ্ব ফুটবলের খর্ব শক্তি / দুলাল মাহমুদ

ছবি
যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেই সুদিন আর নেই। এখন আর এককভাবে কোনো কর্তৃত্ব দেখাতে পারে না। তারপরও সুপার পাওয়ার হিসেবে এখনও সবাই তাদের কম-বেশি মান্য-গণ্য করে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের মোড়লগিরি থেমে নেই। এখনও বিভিন্নভাবে দিয়ে চলেছে হম্বি-তম্বি। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের এই প্রভাব-পতিপত্তি থাকলেও বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম সেরা আসর বিশ্বকাপ ফুটবলে কিন্তু মার্কিনীদের মাতব্বরি চলে না। আর যাই হোক, ফুটবলে মাঠে কূটনীতি কিংবা গা জোয়ারি মনোভাব দিয়ে জয়ী হওয়া যায় না। জিততে হলে থাকতে হবে ফুটবলীয় কৌশল, দক্ষতা ও সৃজনশীলতা। আর এ ক্ষেত্রে তারা অনেক পিছিয়ে আছে। বিশ্বের পরাশক্তি বিশ্ব ফুটবলের খর্ব শক্তির দেশ হিসেবে পরিচিত। চাইলেও পারছে না পরাশক্তি হতে। আপতদৃষ্টিতে মনে হয়, বিশ্বকাপ ফুটবলের সঙ্গে বুঝিবা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটা গভীর নয়। ‘দ্য গ্রেটেষ্ট শো অন অর্থ’ নিয়ে তাদের তেমন মাতামাতি নেই। অথচ যে ১৩টি দেশকে নিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবলের গৌরবময় যাত্রা শুরু হয়, যুক্তরাষ্ট্র তাদের একটি। বিশ্বকাপ ফুটবলে তাদের সেরা সাফল্য অভিষেক আসরেই। সেবার তারা তৃতীয় স্থান অধিকার করে। এ থেকে অনুধাবন করা যায়,

এশিয়া প্রথম আফ্রিকা দ্বিতীয় / দুলাল মাহমুদ

ছবি
ফুটবল খেলায় আগাম কোনো কিছু বলা যায় না। কে জিতবে, কে হারবে কিংবা খেলা অমীমাংসিত থাকবে কিনা এটা নির্ভর করে সেদিনের খেলার উপর। কিন্তু এখন বোধকরি এটা বলেই দেওয়া যাবে, বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম রাউন্ড থেকে এশিয়া এবং দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে আফ্রিকা বিদায় নেবে। এই দুই মহাদেশ বিদায় নেওয়ার পরই এমনটি বলা হচ্ছে, সেটা কিন্তু নয়। এবারের বিশ্বকাপে এমন আভাস আগেই পাওয়া গেছে। এশিয়ানরা শোভাবর্ধনকারী হিসেবে এবং আফ্রিকানা গর্জন করেই থেমে যাবে, এমনটি শুরুতেই আঁচ করা গিয়েছিল। তাছাড়া এটাই এখন দস্তুরমতো রীতি হয়ে উঠেছে। ব্যতিক্রম যে হয় না, সেটা বলা যাবে না। কেননা, অতীতে এশিয়ানরা যেমন দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছে, তেমনিভাবে আফ্রিকানরাও প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে। সত্যিকার অর্থে দুই মহাদেশের মধ্যে খুব একটা তফাত নেই। তবে তুলনামূলকভাবে আফ্রিকানরা এশিয়ানদের তুলনায় এগিয়ে আছে। আর এবারের বিশ্বকাপ তো সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণ করা হয় কে চ্যাম্পিয়ন, কে রানার্স-আপ এবং পর্যায়ক্রমে ধারাবাহিকতা অনুসরণ করে। কিন্তু উল্টো দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অধিষ্ঠিত এশিয়া এবং রানার্স-আপ আফ্রিকা। এই অবস্থান নিয়ে এ

‘মধ্যবিত্ত’-এর গণ্ডি ভাঙতে পারছে না মেক্সিকো / দুলাল মাহমুদ

ছবি
মধ্যবিত্তের গণ্ডি অতিক্রম করা কিন্তু সহজ নয়। কেউ যে পারে না, তা নয়। কেউ কেউ পারে। কেউ কেউ পারে না। পারছে না মেক্সিকো। প্রতিবারই আশার পিদিম জ্বালিয়ে বিশ্বকাপে ফুটবলে অংশ নেয় দেশটি, ‘নিম্নবিত্ত’ থেকে সামাজিক মর্যাদায় ‘মধ্যবিত্ত’ হয়ে উঠে। এরপর আর এগিয়ে যেতে পারে না। বিশ্বকাপ ফুটবলের সঙ্গে এই দেশটির সখ্য একদম শুরু থেকেই। প্রথম বিশ্বকাপে অভিষেক হওয়ার পর এ পর্যন্ত কোয়ালিফাই করেছে ১৫বার। ১৯৯৪ সাল থেকে একটানা খেলেছে ‘রাউন্ড অব সিক্সটিন’-এ। ব্রাজিল আর জার্মানি ছাড়া এই কৃতিত্ব আর কারো নেই। অথচ দলটির সর্বাধিক সাফল্য ১৯৭০ এবং ১৯৮৬ সালে নিজের মাঠে কোয়ার্টার-ফাইনাল খেলা। ১৬ বছরের মধ্যে দুইবার বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করার গৌরব একমাত্র মেক্সিকোর। আর এটি সম্ভব হয়েছে ফুটবলের প্রতি মেক্সিকানদের নিবেদন আর ভালোবাসায়। ফুটবল খেলাটাকে একান্তই আপন করে নিয়েছে আজটেক সভ্যতার দেশ মেক্সিকো। ফুটবল নিয়ে এ দেশটিতে উন্মাদনার একটুও কমতি নেই। বরং এ ক্ষেত্রে তাঁরা অন্য সবাইকে টেক্কা দিতে পারে। ফুুটবলের হিপ্পি যদি কাউকে বলা যায়, সেক্ষেত্রে মেক্সিকানদের কথাই সবার আগে মনে আসে। ফুটবল মাঠকে রূপে, রঙে ভরিয়ে তুলতে তাঁদের জুড়ি মে

উরুগুয়ের সেই পরাক্রম কোথায়? দুলাল মাহমুদ

ছবি
কখনো কখনো সাফল্য প্রাপ্তির উল্টোপথেই রহস্যজনকভাবে নির্ধারিত হয়ে যায় ব্যর্থতার দীর্ঘ সরণি। ১৯৫০ সালের ১৬ জুলাই ব্রাজিলের মারকানা ষ্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দিয়ে যে বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছিল উরুগুয়ে, এরপর দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী পেরিয়ে গেলেও আর কখনো সেই ঠিকানায় পৌঁছতে পারেনি ‘লা সেলেস্তে’রা। কেন পারেনি বা পারছে না, এর কোনো যথাযথ ব্যাখ্যা নেই। তাহলে কি সেদিন বিশ্বকাপ ফুটবলে উরুগুয়ের শিরোপা আর জিততে না পারার ‘এপিটাফ’ লেখা হয়ে গিয়েছিল? এর কোনো সদুত্তরও জানা নেই। এ কেবল বলতে পারে অনাগত সময়। অথচ উরুগুয়ের ফুটবলের ইতিহাস তো গৌরব করার মতো। লাতিন আমেরিকার এই দেশটির মাটিতে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল। প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবলের চ্যাম্পিয়নও উরুগুয়ে। প্রথম আয়োজক ও প্রথম চ্যাম্পিয়ন হিসেবে অমর হয়ে আছে ফুটবল ইতিহাসের পাতায়। অন্য কোনো বিষয় বাদ দিলেও বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রসঙ্গ এলেই এ কারণে আলোচনায় উঠে আসে ফুটবলের এ দেশটি। অবশ্য আরো একটি গৌরব এই দেশটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাদের মতো কম জনসংখ্যা নিয়ে পৃথিবীর আর কোনো দেশ বিশ্বজয় করতে পারেনি। ১৯৩০ সালে উরুগুয়ে যখন বিশ্বকাপ জয় করে, তখন তাদের জনসংখ্যা মাত্র সাড়ে ১৭ লাখ।