ফুটবলের দেশে বিশ্বকাপ / দুলাল মাহমুদ


        
ফুটবল বললেই আমাদের বুকের মধ্যে দোলা দেয় ব্রাজিল। সুর, ছন্দ ও সৌন্দর্যের সবটুকু মহিমা নিয়ে উদ্ভাসিত হয় লাতিন আমেরিকার এই দেশটি। শুধু ফুটবল দিয়ে যে একটি দেশ পাদপ্রদীপের আলোয় ওঠে আসতে পারে, তার চমৎকার নিদর্শন আমাজন অববাহিকার প্রাচীন এই জনপদ। ফুটবলকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড দিয়ে দেশটি সারা দুনিয়ার ফুটবল অনুরাগীদের মন জয় করে নিয়েছে। ফুটবলীয় কারুকাজের মাধুর্য তো আছেই, ফুটবল নিয়ে যে মাতামাতি, তার মাধুরীও কম নয়। এই বিশ্বব্রম্মান্ডের অন্যতম এক বিস্ময় ব্রাজিল ফুটবল দল। ব্রাজিলীয় ফুটবলের যে দক্ষতা, যে সমারহ, যে রোমান্টিকতা তার কোনো তুলনা হয় না। ফুটবলকে বিত্তে, বৈভবে, বৈচিত্রে ভরিয়ে দিয়েছে ব্রাজিল। মাঠের শৈল্পিক ফুটবলের পাশাপাশি গ্যালারির রমণীয়তা-একই বিন্দুতে মিলিত হয়ে গড়ে তোলে স্বর্গীয় অনাবিল আমেজ। ব্রাজিলকে ফুটবলের তীর্থকেন্দ্র বললে মোটেও অত্যুক্তি হবে না। ফুটবলে আবেগ-উচ্ছ্বাস-ভালোবাসার দিক দিয়ে আলাদা একটি স্থান করে নিয়েছে ‘সেলেকাও’রা। ফুটবল যেভাবে ব্রাজিলীয়দের আপ্লুত করে, তা সত্যি অভাবিত ও বিস্ময়কর। ফুটবল যেন তাঁদের জীবনের অংশ। জনপ্রিয় এই খেলাটিকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো কিছুই তাঁরা ভাবতে পারে না। ফুটবলের প্রতি তাঁদের নিবেদন নজিরবিহীন। এ কারণে ‘ফুটবলের দেশ’ হিসেবে পরিচিত ব্রাজিল। বাইরের পৃথিবী ব্রাজিলের ফুটবলে দেখতে পায় কেবলই আনন্দের লহরি। কিন্তু এই দেশটিতে সাম্প্রদায়িক ঐকতান, জাঁকজমক, তারুণ্য, উদ্ভাবন ও দক্ষতারও প্রতীক ফুটবল। লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম দেশটিতে ফুটবল হচ্ছে একটি ক্ষুদ্র জগৎ। এই জগতে সব কিছুই একাকার হয়ে যায়। যাবতীয় অসংগতি ধারণ করা হয় ফুটবলে। যেখানে বিভেদ-বিভাজন থাকে না। ব্রাজিলীয়দের হৃদয়ে প্রতিনিয়ত বাজে ফুটবলের সুর। জীবনটাকে আনন্দের মাঝে বিলিয়ে দিতে ভালোবাসে ব্রাজিলীয়রা। তাঁদের জীবনদর্শন হচ্ছে : খাও-পিও-মস্তি করো। আর মস্তির অন্যতম খোরাক ফুটবল ও সাম্বা নাচ। ফুটবল এবং সাম্বা- এই দুই আবেগ কর্তৃত্ব করে ব্রাজিলের আত্মাকে। ব্রাজিলের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের মৌল ভিত্তিকে প্রতিনিধিত্ব করে ফুটবল ও সাম্বার যোগসূত্র। তবে ব্রাজিলীয় কিশোরী-তরুণীদের বিনোদনের অন্যতম অবলম্বন যেমন সাম্বা নাচ, তেমনি কিশোর-তরুণদের অবসরের প্রিয় খেলা ফুটবল। তবে ফুটবল ও সাম্বা, এখন সর্বজনীন রূপ পেয়েছে। সেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গের কোনো পার্থক্য নেই। ড্রামের বাদ্য কানে যেতেই ব্রাজিলীয়দের শরীর সহজাতভাবেই দুলে ওঠে, তেমনিভাবে একটু সময় পেলেই রাস্তায় কিংবা খোলা প্রান্তরে ফুটবল নিয়ে মেতে ওঠতে দেখা যায় সব বয়সী মানুষকে। ফুটবলের নামে ব্রাজিলীয়রা আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন। এর কারণ, এটি শুধু তাদের জাতীয় খেলা নয়, তাঁদের সংস্কৃতিরও অংশ। ফুটবলের মাঠ নেই কিংবা ফুটবল খেলা হয় না, ব্রাজিলে এমন জায়গা খুঁজে পাওয়া যাবে না। অধিকাংশ ব্রাজিলীয় ফুটবল খেলতে ভালোবাসেন। সেটা খুব অল্প বয়স থেকেই। অনেকেই ফুটবল খেলেন। অনেকে ফুটবল দেখতে পছন্দ করেন। স্থানীয় দলকে সমর্থন দেওয়ার জন্য স্টেডিয়ামে ছুটে যাওয়া তাঁদের জীবনচর্চার একটি অংশ। আর জাতীয় দলের খেলা হলে তো কথাই নেই। এক মন, এক প্রাণ হয়ে ব্রাজিলকে সমর্থন করেন সাম্বা নাচের দোলায় দোলায়। ফুটবল কেবল জাতীয় বিনোদন নয়, অনেকটা ধর্মের মতো হয়ে ওঠেছে ব্রাজিলে।
গত শতাব্দীর ত্রিশের দশক থেকে সাম্বার পাশাপাশি ব্রাজিলীয়দের কাছে আদরণীয় হয়ে ওঠে ফুটবল। ব্রাজিলীয় ফুটবল দর্শকদের সহজেই আকৃষ্ট করতে পারে। এর কারণ তাঁদের খেলার দক্ষতা, সৃজনশীলতা, সাবলীলতা, দ্রুতগামিতা। সেইসঙ্গে অছে তাল-লয়-সুর-ছন্দ। সব মিলিয়ে ব্রাজিলের শৈল্পিক ফুটবলে ছুঁয়ে যায় রোমান্টিক মন। দেশে দেশে ব্রাজিলীয় ফুটবলের জয়জয়কার। ইউরোপীয়দের মতো ব্রাজিলীয়রা সাধারণত বিশাল কাঠামোর ও শারীরিকভাবে শক্তিশালী নয়। যে কারণে তাঁরা দৈহিক শক্তি প্রয়োগ করে খেলা পছন্দ করেন না। ব্রাজিলের খেলার স্ট্যাইলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ড্রিবলিং। গ্যারিঞ্চা, পেলে, রোনালদো, রোনালদিনহোর মতো ফুটবলাররা ছিলেন অসাধারণ ড্রিবলার। ফুটবলের এই শিল্পীরা ড্রিবলিং দিয়ে দর্শকদের শুধু মুগ্ধতাই ছড়াননি, মাথায় চড়িয়েছেন সাফল্যের মুকুট। শিল্প এবং সাফল্য-এই দুয়ের মেলবন্ধন ঘটাতে পেরেছেন কেবল ব্রাজিলীয়রাই। ব্রাজিল যখন ছন্দময় ফুটবল খেলে, তখন মাঠে ভিন্নধর্মী ডাচ চিত্রকর ভিনসেন্ট ভ্যান গঁগের সূর্যমুখী ফুল যেন ঢেউ খেলে যায়। কি যে তার অপরূপ শোভা। কি যে তার লালিত্য। কি যে সুরেলা আর মাদকতাময়। ফুটবল খেলা যে এতটা আনন্দদায়ক, এতটা রোমাঞ্চকর, এতটা সৃজনশীল হতে পারে, সেটা ব্রাজিলের খেলা না দেখলে অনুধাবন করা যায় না। বিনোদন যদি ফুটবলের সারকথা হয়, তাহলে ব্রাজিলীয় ক্রীড়াশৈলীতে তা পরিপূর্ণভাবে উদ্ভাসিত হয়।
ব্রাজিলই একমাত্র দল, প্রতিটি বিশ্বকাপে খেলেছে। ফুটবলে গড়েছে নতুন ইতিহাস। ১৯৫৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে ব্রাজিল। সেই দলে ছিলেন শতাব্দীর অন্যতম সেরা ফুটবলার পেলে। সে সময়ই সূচনা হয় ব্রাজিলীয় ফুটবলের স্বর্ণালি যুগের। তিনবার বিশ্বকাপ জিতে ১৯৭০ সালে চিরতরে লাভ করে ‘জুলে রিমে ট্রফি’। ব্রাজিল কেবল সর্বাধিক পাঁচবার বিশ্বকাপই জয় করেনি, খেলেছে উচ্চমানসম্পন্ন ও আনন্দদায়ী ফুটবল। আক্রমণভাগের দুর্ধর্ষ ফুটবলারদের আগ্রাসী, সৌকর্যময় ও চমকপ্রদ নৈপুণ্য এবং ছোট ছোট পাসে ফুটবল খেলার কারণে ব্রাজিল খ্যাতি পেয়েছে রোমাঞ্চকর দল হিসেবে। জাতীয় দল যখন খেলে, তখন ব্রাজিলীয় সমর্থকরা প্রত্যাশা করে, আক্রমণাত্মক, লাবণ্যময় ও পাসিং ফুটবল। শিল্পিত ফুটবল দেখতে পেলে ব্রাজিলের সমর্থকরা আর কিছু চায় না। ব্রাজিলীয়রা ‘জোগো বোনিত’ অর্থাৎ ‘দ্য বিউটিফুল গেম’এর পূজারি। সুন্দর ফুটবল খেলে দল হারলেও তাঁদের কিছু আসে যায় না। কিন্তু যেন-তেন ফুটবল খেলে জেতাটা ব্রাজিলীয়রা মেনে নিতে পারে না। তাঁদের কাছে শৈল্পিক ফুটবলটা হচ্ছে প্রথম ও শেষ কথা। ২০০২ সালে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের কোচ ছিলেন লুইস ফেলিপে স্কলারি। তিনি ব্রাজিলের ৪-৪-২ ফরমেশনের পরিবর্তে তিন জন সেন্টার ব্যাক নিয়ে খেলান ৩-৪-১-২ পদ্ধতিতে। কৌশল হিসেবে ‘বিগ ফিল’ বেছে নেন চীনা সামরিক শাস্ত্র ‘সুন জু’ অর্থাৎ ‘দ্য আর্ট অব ওয়ার’। ব্যতিক্রমধর্মী এই অনুশীলন পদ্ধতি দিয়ে তিনি এশিয়া জয় করলেও মন ভরেনি সমর্থকদের। তাতে ছিল না ব্রাজিলীয় ফুটবলের রূপ-লাবণ্য ও জৌলুস। সেই স্কলারি আবারও দায়িত্ব নিয়েছেন জাতীয় দলের। ব্রাজিলীয় হলেও তাঁর কৌশল দেখে মনে হয়, তিনি যেন ইউরোপীয় ফুটবলের অনুরাগী। সুন্দর ফুটবলের পরিবর্তে জয়টাই তাঁর কাছে মুখ্য। ব্রাজিল জাতীয় দলের সাবেক ডিফেনসিভ মিডফিল্ডার ফুটবলার ডুঙ্গাও ২০০৬ সালে কোচ হওয়ার পর অতিমাত্রায় ঝুঁকে পড়েন রক্ষণাত্মক ফুটবলে। বিসর্জন দেন ব্রাজিলীয় ফুটবলের চিরায়ত সৌন্দর্যকে। এ নিয়ে সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সুন্দর ফুটবলের অনুরাগীরা এটা মেনে নিতে পারেননি। ঐতিহ্য বিসর্জন দিয়ে বিশ্বসেরা হতে রাজী নয় ব্রাজিলীয়রা। তাঁরা চায় সুন্দর ফুটবলের নির্যাস দিয়ে আত্মাকে পরিশোধিত করতে।
ব্রাজিলে ফুটবল কেবল ঘাষের মাঠেই হয় না, সাগরসৈকতেও খেলা হয় সাম্বা ফুটবল। আর যে কোনো আনন্দ-উৎসব উদযাপনের জন্য ব্রাজিলীয়দের প্রিয় স্থান সাগরসৈকত। আর বরাবরই আনন্দের উপলক্ষ্য নিয়ে আসে ফুটবল। তবে সৈকতে ফুটবল খেলাটাকে তাঁরা শিল্পে রূপান্তরিত করতে পেরেছে। এ কারণে অসম্ভব জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই বীচ ফুটবল। বালুতে রকমারি ফুটবলের পসরা ব্রাজিলের অন্যতম বিনোদনে পরিণত হয়েছে। সর্বোপরি, ফুটবল হয়ে ওঠেছে ব্রাজিলের জনগণের জীবন যাপনের একটি উপায়। সেটা ঘাষের মাঠেই হোক আর বালুর মাঠেই হোক, ফুটবল যে ব্রাজিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা, এটা নিয়ে কোনো রকম সংশয় নেই। ব্রাজিলীয় ফুটবলের রহস্যময়তা, আনন্দোৎসব, ছন্দোময়তা, নির্ভেজাল আনন্দ ও মুক্ত পাখির মতো উড়ে চলা যে কাউকে মোহিত করার সামর্র্থ্য রাখে। ফুটবল এত গভীরভাবে, এত আবেগগতভাবে ব্রাজিলের সংস্কৃতির সঙ্গে বোনা আছে যে, দু’টি সত্তা একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে। ১২০ বছর আগে ব্রাজিলে ‘বিউটিফুল ফুটবল’ আসার পর লাতিন আমেরিকার দেশগুলো সামাজিকভাবে স্পন্দনশীল হয়ে ওঠে। ফুটবল খেলা বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি অভিব্যক্তিময় শিল্পকলায় পরিণত হয়। হয়ে ওঠে সামাজিক যোগাযোগের একটি চমৎকার হাতিয়ার। পাঁচবার বিশ্বকাপ জয় (১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪ ও ২০০২) ফুটবল মাঠে মহান জাতির মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে ব্রাজিলকে। উৎকর্ষতা ও সাফল্য দিয়ে আধুনিক ফুটবলে আলাদা একটা অবস্থান গড়ে নিতে পেরেছে। ব্রাজিলে ফুটবলের গোড়াপত্তনের পর ফুটবলের দর্শন হচ্ছে, দলীয় সমষ্টির মধ্যে উদ্দীপনা, উপভোগ ও ব্যক্তিগত ঔজ্জ্বল্য। ব্রাজিলের সমাজবিজ্ঞানী, নৃতত্ত্ববিদ, ঐতিহাসিক ও লেখক গিলবার্তো ডি মেল্লো ফ্রেইর ১৯৫৯ সালে লিখেছেন, ‘ব্রাজিলীয়রা ফুটবল খেলে এমনভাবে যেন এটি একটি নৃত্যকলা। নাচ, কাজ ও খেলাটাকে অনেকটা একই ধারায় নিয়ে আসে’। গৎবাঁধাভাবে সবাই জানেন, জীবন সম্পর্কে ব্রাজিলীয়দের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই সাদামাটা, পরিতৃপ্তিকর, নিরুদ্বিগ্ন ও ক্রীড়াপরায়ণ জাতি হিসেবে। কিন্তু স্বভাবগত এই বৈশিষ্ট্য চলকে পড়ে জাতির ক্রীড়াচৈতন্যে। ফুটবল খেলায় ব্রাজিলীয়দের অভিপ্রায় সুষ্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। বিংশ শতাব্দীর মতো সাফল্য না পেলেও উনবিংশ শতাব্দীর ত্রিশ ও চল্লিশ দশকে প্রাথমিক ভিত্তি স্থাপিত হয় ব্রাজিলীয় ফুটবলের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও ঘরানার। তখন থেকেই ব্রাজিলীয় ফুটবলাররা নিজস্ব একটা ধারা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। সেটাই ধীরে ধীরে ব্রাজিলীয় ফুটবল প্রদর্শনীর বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে।
১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপে ব্রাজিল প্রথম রাউন্ডের বাধা অতিক্রম করতে না পারলেও দলের দুর্দান্ত সেন্টার ফরোয়ার্ড প্রিগুইনহো তাঁর ক্রীড়াশৈলী দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করে দেন। যুগোশ্লাভিয়ার কাছে ২-১ গোলে হারলেও দলের একমাত্র গোলটি করেন তিনি। বলিভিয়াকে ৪-০ গোলে যেভাবে উড়িয়ে দেন, সেদিনই দেখা মেলে বিশ্বকাপে ব্রাজিলের প্রথম তারকা ফুটবলারের। সেই বিশ্বকাপে ব্যর্থতা নিয়ে ফিরলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের মেলে ধরতে সক্ষম হয় ব্রাজিল। খেলার প্রতি বিস্ময়কর সতেজতা ও চমকপ্রদ মনোভাব এবং খেলোয়াড়দের রহস্যময়তা ও রোমান্টিকতা দিয়ে ফুটবল অনুরাগীদের রোমাঞ্চিত করে। ব্রাজিল বুঝিয়ে দেয়, তারা এসেছে ফুটবলে বিজয়নিশান উড়াতে। নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে। বিশ্বকে সুন্দর ফুটবল উপহার দিতে। তবে পারফরম্যান্সের উন্নতি করতে থাকলেও ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপের আগে সাফল্য পায়নি ব্রাজিল। বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে বিশ্বব্যাপী এই খেলায় শুরু হয় ব্রাজিলের পরাক্রম আর শৈল্পিক ফুটবলের জয়যাত্রা। তরুণ পেলে আর হেঁয়ালিপূর্ণ প্রতিভা গ্যারিঞ্চার ব্রাজিল প্রতিপক্ষকে ছিন্ন-ভিন্ন করে দিয়ে উড়ায় বিজয়ের পতাকা। ৪-২-৪ ফর্মেশনে ভাভা ও জাগালো ছিলেন আক্রমণভাগের দুই মারাত্মক অস্ত্র। মধ্যমাঠে ডিডি আর জিটোর সহযোগিতায় কোচ ভিনসেন্ট ফিওলার দল আক্রমণাত্মক শৌর্য ও ওজস্বিতার পাশাপাশি রক্ষণভাগেও দৃঢ়তা দেখায়। প্রশংসনীয় কৌশল প্রয়োগ করে ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা নৈপুণ্য প্রর্দশন করে। সে সময় ইতালীয় সাংবাদিক টমাজ মাজুনি লেখেন, ‘সিম্ফনি অর্কেষ্ট্রার মতো সুন্দর ফুটবল খেলেন ইংলিশরা। আর চরমতম হট জাজ ব্যান্ডের মতো দুর্দান্ত ফুটবল খেলেন ব্রাজিলীয়রা’। ফুটবলের প্রতি ব্রাজিলীয়দের দর্শন ও অভিপ্রায় বিশ্বব্যাপী সমাদার পেয়েছে। এমনকি ফুটবলে সাম্বার বিশেষত্বের জন্য যে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে, তা উজ্জ্বলতর একটা অর্জন। ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসের সেরা দল হিসেবে মনে করা হয় ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলটিকে। মেক্সিকোর প্রখর সূর্যালোকের মধ্যে অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপে একটি দলের পক্ষে যতটা উচ্চাঙ্গের ও কারুকার্যময় ফুটবল খেলা সম্ভব, সেটাই খেলেছে ব্রাজিল। সেটা ছিল যেন অন্য কোনো গ্রহের ফুটবল। ডিফেনসিভ মায়েস্ত্রো কার্লোস আলবার্তোর নেতৃত্বে ফুটবল খেলার ধারণাটাই বদলে দেয় ব্রাজিল। ১৯৫৮ সালের ব্রাজিল দল যদি হট জাজ ব্যান্ড হয়ে থাকে, ১৯৭০ সালের দলটির কোনো তুলনা হয় না। সেটি ছিল ঐশ্বরিক একটি দল। অসাধারণ উদ্ভাবনী প্রতিভা, সম্মিলিত ঐকতান এবং সবচেয়ে সুন্দর ফুটবলের ঝিলিক দেখিয়ে এ যাবৎকালের সেরা দল হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। পেলে, রিভেলিনো ও  জেইরজিনহোর সর্বোচ্চ মানের নৈপুণ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খেলে সৃজনশীলতার শীর্ষবিন্দুতে উপনীত হয় ‘ক্যানারিনহো’রা। এ কারণে দলটি এই গ্রহে উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন ফুটবল সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। ভার্দে-অ্যামারেলা অর্থাৎ সবুজ ও হলুদ জার্সি সবার আস্থা, ভালোবাসা ও সন্মান অর্জন করতে পেরেছে। এটাই হয়ে ওঠেছে ব্রাজিলীয় ফুটবলের চিরকালীন পরিচয়। দুই যুগ বিশ্ব শিরোপা জয় করতে না পারলেও ব্রাজিল ১৯৯৪ সালে বিশ্বক্রীড়ার শিখরে নিজেদের স্থাপন করে। রোমারিও, বেবেতো, ডুঙ্গা, তাফারেল, জরজিনহোরা শিরোপা এনে দিলেও সত্যিকার অর্থে অতীতের সেই ফুটবলদর্শন অর্থাৎ চোখ ধাঁধানো ফুটবল প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়। রোনালদো, রিভালদো, রোনালদিনহোদের কৃতিত্বে ২০০২ সালে জাপান এবং কোরিয়ায় বিশ্বজয় করে হয় ‘পেন্টাক্যামপোয়েস’ হয়। কিন্তু ১৯৫৮ ও ১৯৭০ সালের তুলনায় এই বিশ্¦ শিরোপা জয় ছিল নিতান্তই আনুষ্ঠানিকতা। তাতে কোনো ঔজ্জ্বল্য ও দীপ্তি ছিল না। ছিল না সাম্বার নৃত্যকলা। ব্রাজিলের ফুটবল দর্শন যেন অনেকটাই বদলে গেছে। শিল্পীর তুলনায় কদর বেড়েছে অ-শিল্পী ফুটবলারদের। কেবল সাফল্যের জন্য রষ-কসহীন জার্মান ঘরানার রক্ষণাত্মক ফুটবলেও ঝুঁকে পড়তে দেখা যায়। ব্যক্তিগত ক্যারিশমা ও উদ্ভাবনী ফুটবল গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। গ্রহণ করা হয় ইউরোপীয় ফুটবলদর্শনকে। গ্যারিঞ্চা, পেলের শৈল্পিক ও সুন্দর ফুটবল হারিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু এই ফুটবলে মোটেও খুশি নন সৌন্দর্যপিয়াসীরা।       
বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে ব্রাজিল উপহার দিয়েছে কিংবদন্তি সব ফুটবলার। আর কোনো দেশের পক্ষে ব্রাজিলের মতো এত বেশি খ্যাতিমান ও শিল্পী ফুটবলার গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য লিওনিদিস, হেলেনো ডি ফ্রেইটাস, অ্যাডেমির, নিলটন সান্তোষ, দিদি, জালমা সান্তোষ, গিলমার, গ্যারিঞ্চা, জিটো, পেলে, গারসন, কার্লোস আলবার্তো, জেইরজিনহো, রিভেলিনো, টোস্টাও, ক্লোদোয়ালদো, জিকো, ফালকাও, সক্রেটিস, জুনিয়র, কারেকা, রোমারিও, কাফু, লিওনার্দো, রবার্তো কার্লোস, রিভালদো, রোনাল্ডো, রোনালদিনহো, কাকা এবং সাম্প্রতিক সময়ের নেইমার। এঁদের মধ্যে কেউ স্ট্রাইকার, কেউ মিডফিল্ডার, কেউ রক্ষণভাগের খেলোয়াড় এবং কেউবা গোলকিপার। এক একজন ফুটবলার যেন এক একটি যুগের প্রতিনিধি। ফুটবল শিল্পের ধারক ও বাহক। এই ফুটবলারদের অনেকেই বিশ্বকাপ জয়ী দলের খেলোয়াড়। আর যাঁরা বিশ্বকাপ জিততে পারেননি, তাঁরাও তাঁদের ফুটবলশৈলী দিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। যথার্থ কারণেই ১৯৭০ ও ১৯৫৮ সালে বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিল দলকে সর্বকালের সেরা দলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯৮২ সালের দলটিও কোনো অংশে পিছিয়ে ছিল না। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সক্রেটিসের নেতৃত্বাধীন এই দলটিতে ছিলেন গোলে ভালদির পেরেজ, ডিফেন্ডার অস্কার, রাইট ব্যাক লিওনার্দো, ডিফেন্ডার লুঝিনহো, লেফট ব্যাক জুনিয়র, মিডফিল্ডার সেরেজো, অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার জিকো, সেন্টার মিডফিল্ডার ফালকাও, লেফট উইঙ্গার এডের, সেন্টার ফরোয়ার্ড সার্জিনহো প্রমুখ। সুন্দর ফুটবলের প্রতিনিধি এই দলটি ছিল বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার। নান্দনিক ফুটবলের প্রদর্শনী দেখিয়ে মাত করে পুরো দুনিয়াকে। প্রথম রাউন্ডে সোভিয়েত ইউনিয়ন, স্কটল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দেয়। দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনাও পাত্তা পায়নি। কিন্তু উড়ে এসে জুড়ে বসা ‘আগন্তুক ফুটবলার’ ইতালির পাওলো রসির কাছে দুর্ভাগ্যক্রমে হেরে গিয়ে স্বপ্নভঙ হয় ব্রাজিলের। দুই দুইবার খেলায় সমতা নিয়ে আসলেও হার এড়ানো যায়নি। আসলে সেই দিনটি ছিল ‘রহস্যময় ফুটবলার’ রোসির। তাঁর হ্যাটট্টিকে ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্ল্যাসিক ম্যাচে ৩-২ গোলে জয়ী হয় ইতালি। এই ম্যাচটিকে ‘সারিয়া বিপর্যয়’ (খেলার ভেন্যু বার্সেলোনার সারিয়া স্টেডিয়াম) হিসেবে অভিহিত করা হয়। সেবার ‘গোল্ডেন বুট’ ও ‘গোল্ডেন বল’ জয়ী রোসির চমকপ্রদ নৈপুণ্যে বিশ্বকাপে বাজিমাত করে ‘দ্য ব্লুজ’রা। হেরে গেলেও ব্রাজিল দলের সেই ফুটবলারদের কথা ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। ব্রাজিলীয় ফুটবলাররা ক্যারিশম্যাটিক ফুটবল দিয়ে দর্শকহৃদয় জয় করে সামাজিকভাবেও বেশ মর্যাদা পেয়ে থাকেন। দেশের মাটিতে তাঁরা যথেষ্ট সমাদৃত। ভারতে যেমন চলচ্চিত্র তারকারা জাতীয় নির্বাচনে অন্যতম আকর্ষণ হয়ে ওঠেন, তারচেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ব্রাজিলীয় ফুটবলাররা। রাজনৈতিক মঞ্চে ফুটবলররা বেশ কদর পেয়ে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রেই ফুটবল ও ফুটবলাররা হয়ে ওঠেন রাজনীতির মাঠের তুরুপের তাস। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে ফুটবলারদের সংখ্যা নেহাত মন্দ নয়। এটা অবশ্য ঊহ্য। কেননা, দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়ে আসছে ‘দ্য গোল্ডেন স্কোয়াড’-এর ফুটবলাররা। সেটাই তাঁদের কাছে বড় পাওয়া।
আয়োজক হিসেবেও ব্রাজিলের যথেষ্ট সুখ্যাতি রয়েছে। ১৯৫০ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবলের স্বাগতিক হয় ব্রাজিল। বিশ্বযুদ্ধের জন্য দু’টি বিশ্বকাপ না হওয়ার পর আয়োজক হিসেবে বেছে নেওয়া হয় বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই দেশটিকে। তখনকার দমবন্ধ করা প্রেক্ষাপটে একটি আনন্দময় বিশ্বকাপ উপহার দেওয়ার জন্য সাম্বার দেশের বিকল্প ছিল না। উৎসব-আনন্দ উদযাপনের ক্ষেত্রে ব্রাজিলীয়দের কোনো জুড়ি নেই। ‘রিও কার্নিভাল’-এর খ্যাতি জগতজোড়া। দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় এই কার্নিভালকে কেন্দ্র করে ব্রাজিল হয়ে ওঠে আনন্দের অশেষ খনি। আর বিশ্বকাপ ফুটবল তো ব্রাজিলকে করে দেয় উন্মাতাল। সেই উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ে ব্রাজিলের ঘরে ঘরে। আয়োজক হিসেবে ব্রাজিল সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়। বিশেষ করে, প্রতিটি ম্যাচে দর্শক উপস্থিতি ও তাঁদের আবেগ-উচ্ছ্বাস নতুন মাইলফলক গড়তে সক্ষম হয়। সেই মাইলফলক বিশ্বকাপের ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া আর কারো পক্ষে ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। রিও জি জানেরিও’র মারকানা স্টেডিয়ামে ব্রাজিল এবং উরুগুয়ের মধ্যকার ফাইনাল রাউন্ডের শেষ ম্যাচে দুই লাখ দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড ইতিহাস হয়ে অছে। অবশ্য ব্রাজিলের চিরকালের স্বপ্নভঙের কারণ হয়ে আছে সেই ‘ফাইনাল’ ম্যাচ। অনেকটা নিশ্চিত হয়েই বিশ্ব শিরোপা জয় উপলক্ষে উৎসবের মঞ্চ সাজিয়ে রেখেছিল ব্রাজিল। সেবার ব্রাজিল ছিল অপ্রতিরোধ্য একটি দল। উরুগুয়ের সঙ্গে ড্র করলেই শিরোপা জিতবে ব্রাজিল, এমনটাই হিসাব। শুধু সময়েরই অপেক্ষা। রাইট উইঙ্গার ফ্রিয়াকার গোলে উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো স্টেডিয়াম। দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় সমতা নিয়ে আসেন উরুগুয়ের ইনসাইড ফরোয়ার্ড স্কিয়াফফিনো। তাতেও ব্রাজিলীয়দের উৎসবের কোনো কমতি ছিল না। কিন্তু ‘লা সেলেস্তে’-এর উইঙ্গার আলসিদেস ঘিগিয়া শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন। উৎসবের জন্য প্রস্তুত পুরো ব্রাজিল হয়ে ওঠে শোকস্তব্ধ। এরপর ব্রাজিল পাঁচবার বিশ্বকাপ জিতেছে। কিন্তু নিজের মাটিতে বিশ্বকাপ জিততে না পারার ‘জাতীয় শোক’ তাঁরা ভুলতে পারেনি। সেই বেদনা লাঘব করার সুযোগ এসেছে ৬৪ বছর পর। দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবলের স্বাগতিক ব্রাজিল। অবশ্য এবারের আয়োজন নিয়ে ব্রাজিলীয় সরকার বেশ চাপের মুখে আছে। প্রস্তুতি শেষ করতে গিয়ে একদম নাকে-মুখে অবস্থা। সময়মতো সম্পন্ন করা যায়নি স্টেডিয়াম সহ বিশ্বকাপের যাবতীয় অবকাঠামো নির্মাণ। যোগাযোগ ব্যবস্থাও যথাযথভাবে গড়ে তোলা হয়নি। তদুপরি বিপুল অর্থ ব্যয় করে স্টেডিয়াম নির্মাণ করায় ক্ষুব্ধ অনেকেই। দেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ না করে বিনোদন খাতে এই অর্থ ব্যয় করায় ফুঁসে ওঠেছে অসংখ্য ব্রাজিলীয়। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। আন্দোলন ঠেকাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বেশ হিমসিম খেতে হয়। তারপর নানান দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন মহলের আন্দোলন-বিক্ষোভ চলছে। এ অবস্থার মধ্যেই দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ। ফুটবল অনুরাগীদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে। এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়, বিশ্বকাপ মাঠে গড়ালেই বদলে যাবে ব্রাজিলের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট। কেননা ফুটবল, বিশ্বকাপ এবং স্বাগতিক-এই ত্রিধারায় মিলেছে উৎসবের দেশ ব্রাজিল। আর এমন উপলক্ষ তো এক জীবনে আর আসবে না। এমন মহোৎসব থেকে কেউ নিশ্চয়ই বঞ্চিত হতেও চাইবে না। আর এ কারণে এই বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে তোলার জন্য উদ্দীপ্ত ও উচ্ছ্বসিত ব্রাজিলীয়দের উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই। এর আয়োজক হওয়ার পর থেকে সাম্বার ছন্দে আন্দোলিত হচ্ছে ব্রাজিল। সবার হৃদয়ে স্পন্দিত হচ্ছে ‘অল ইন ওয়ান রিদম’। গানে, পোষ্টারে, চিত্রকলায়, ভাস্কর্যে সেজে ওঠেছে ব্রাজিল। চারপাশ হয়ে ওঠছে রঙে রঙে রঙিন। তাতে হলুদের প্রলেপই বেশি। ফুটবলের দোলায় দুলতে শুরু করেছে ফুটবলের দেশ। সাম্বার দেশ। উৎসবের দেশ। ফুটবলে, সাম্বায়, উৎসবে মশগুল এখন ব্রাজিল। তার রেশ একটু একটু করে ছড়িয়ে পড়ছে সারা দুনিয়ায়। চারপাশে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে ‘উই আর ওয়ান’। ওলে ওলে ওলে ওলা। ওলে ওলে ওলে ওলা। ওলে ওলে ওলে ওলা.....
রচনাকাল : ১৪ মে ২০১৪
dulalmahmud@yahoo.com          

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাংলা ক্রিকেট সাহিত্য এবং শঙ্করীপ্রসাদ বসু / দুলাল মাহমুদ

সোনালি অতীতের দিনগুলো / বশীর আহমেদ

‘মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়’ / দুলাল মাহমুদ

ক্রীড়া সাংবাদিকতার মূল্যায়নের দিন/ দুলাল মাহমুদ

নেইমারকে নিয়ে কেন এই হাহাকার? দুলাল মাহমুদ

আমাদের ফুটবলাররা-২

সোনালি অতীতের দিনগুলো-২ / বশীর আহমেদ

এই ব্রাজিল সেই ব্রাজিল নয় / দুলাল মাহমুদ