সোনালী অতীতের দিনগুলো-৫ / বশীর আহমেদ

১০০.
১৫ সেপ্টেম্বর রেলওয়ে ব্লুজ আজাদ স্পোর্টিংকে ২-১ গোলে পরাজিত করে পূর্ণ পয়েন্ট লাভে সমর্থ হয়েছিল। প্রথম পর্বে তারা ২-০ জয়ী হয়েছিল। রেল দল প্রথমার্ধে সেন্টার ফরোয়ার্ড জেমস এবং লেফট আউট মনজুরের গোলে ২-০তে এগিয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধে আজাদ ভাল খেলেও একটির বেশি গোল করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত তাদেরকে ২-১ গোলে পরাজয়বরণ করতে হয়েছিল।
মোহামেডানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা ওয়ান্ডারার্সকে ১৬-৯-৬৭ তারিখের খেলায় আমরা অর্ধডজন গোলের লজ্জায় ভাসিয়েছিলাম আর আমাদের লেফট আউট মুসা চলতি লিগে তার দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করার গৌরব অর্জন করেছিল। প্রথম পর্বের খেলায় ওয়ান্ডারার্স হেরেছিল ৩-০ গোলে। আমাদের সামনে আর মাত্র একটি ম্যাচ, যে ম্যাচ আমাদেরকে লিগ চ্যাম্পিয়ন বানাতে পারে অথবা আমাদের চ্যাম্পিয়নশিপটা ছিনিয়ে নিতে পারে। ইপিআইডিসি আমাদের সমশক্তির টিম।
আমাদের সাথে ওয়ান্ডারার্সের ম্যাচটি অন্যরকম হয়েছিল। যার বর্ণনা ১৭-৯-৬৭ তারিখে মর্নিং নিউজ পত্রিকা করেছিল এভাবেÑ ওঃ ধিং হড়ঃ ঢ়বৎঢ়ড়ংবষবংং ড়হব নঁঃ রঃ ধিং ভধৎ ভৎড়স বহঃবৎঃধরহম ঃযব গড়যধসবফধহ যড়ষফ ঃযব ঁঢ়ঢ়বৎযধহফ ড়ভ ঃযব ংযড়ি ধহফ রঃ ড়িঁষফ নব হড় বীধমমবৎধঃরড়হ ঃড় ংধু ভড়ৎ ধহ ধিৎফ দএঙ’ ফড়হি ঃড় ঃযব বহফ.
ঞযব ডধহফবৎবৎং, যড়বিাবৎ, ফরফ সধশব ধহ বভভড়ৎঃ ঃড় রহভঁংব ংড়সব ড়ঢ়ঢ়ড়ংরঃরড়হ রহঃড় ঃযব ঢ়ৎড়পববফরহমং. অহফ ঃযবংব বভভবপঃং ফরফ ধষংড়  বহধনষব ঃযবস ঃড় সধশব ধ ভবি মড়ধষ নৎবধশ ঃযৎড়ঁমযং রহঃড় ঃযব ড়ঃযবৎং ঃবৎৎরঃড়ৎ, ইঁঃ ঃযধঃং ধং ভধৎ ধং ঃযবু  বিৎব ধনষব ঃড় মড়, ধহফ মড়.
খেলার ৫ মিনিটেই প্রতাপের পাস ধরে মুসা প্রথম গোল করে। ১৩ মিনিটে হাফিজের পাস মুসা ধরে শামসুকে দিলে সেটা থেকে শামসু আমাদেরকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেয়। বিরতির ৫ মিনিট আগে মুসা দ্রুত দুটি গোল করে হ্যাটট্রিকের কাছে পৌঁছে যায় (৪-০)। মুসার দুটি গোলের কারিগর ছিলাম আমি আর প্রতাপ।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হয়েছিল মুসার হ্যাটট্রিককে ঘিরে। সুযোগটাও এসে গিয়েছিল কিছুক্ষণের মধ্যে আর মুসা তার নিজস্ব নৈপুণ্যের ঝলক দিয়ে গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেছিল। খেলার মাঝামাঝি সময় শামসু গোলের সংখ্যা বাড়িয়ে ‘অর্ধডজন’ করেছিল। বাকি সময় আমরা গাছাড়া গোছের খেলা খেলে সময় কাটালেও খেলা নিয়ে ওয়ান্ডারার্স দলের কোন মাথাব্যথা ছিল না। খেলা শেষ হলে মনে হয়েছে তারা স্বস্তি পেয়েছে।
মোহামেডানের প্লেয়ার লিস্ট : রানা (গোলরক্ষক), জহির, তোরাব আলী ও পিন্টু, কাদের ও গফুর, প্রতাপ, বশীর, শামসু, হাফিজ ও মুসা।
ঢাকা ওয়ান্ডারার্স : ফেরদৌস (গোলরক্ষক), কুটুমনি, আসলাম ও আনসার, রেজা ও ইসমাইল রুশো, আলাউদ্দিন, সুরেন, হাবিব, সাদেক ও সোনা মিয়া।
আজাদ স্পোটিং-এর দুর্ভাগ্য যে, তারা ১৭-৯-৬৭ তারিখের খেলায় দু’দুবার লিড নিয়েও রহমতগঞ্জের কাছে হেরেছিল। খেলার তৃতীয় মিনিটেই আজাদের রাইট হাফ অরুণ প্রাণ ২৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত কিক দিয়ে অবিশ্বাস্য গোল করে দলকে ১-০ এগিয়ে দিয়েছিল। আজাদের এ লিড বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। দশ মিনিটের মধ্যেই রহমতগঞ্জের বেলাল সেটা শোধ করে দিয়েছিল ১-১। আজাদকে ২২ মিনিটে আবারও লিড এনে দিয়েছিল নাসিম কিন্তু মিনিট খানিক পরেই শাহজাহান গোল করে রহমতগঞ্জকে সমতায় ২-২ ফিরিয়ে ছিল।  ম্যাচ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে দুই টিমই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলাকে প্রাণবন্ত করে তুলেছিল। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে খেলা প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং উত্তেজনায় ভরপুর হয়ে উঠেছিল। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময় রহমতগঞ্জের লালু চমৎকার গোল করে দলকে ৩-২ লিড এনে দিয়েছিল এবং দশ মিনিট পর গফুর গোলের ব্যবধান বাড়িয়ে ৪-২ করেছিল। খেলার শেষ বাঁশির আগে আজাদ একটি গোল করলেও ম্যাচ ড্র করার জন্য তারা আর সময় পায়নি। রহমতগঞ্জ ৪-৩ গোলের লিড নিয়েই মাঠ ছেড়েছিল। 
ইস্টএন্ড বয়েজ ২য় বিভাগ ফুটবল লিগে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথম বিভাগে উন্নীত হয়েছিল। ১৭ সেপ্টেম্বর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত (দিনের প্রথম খেলায়) উত্তেজনাকর লিগ ডিসাইডিং ম্যাচে তারা পাকিস্তান স্পোর্টিংকে ২-০ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল। খেলা শেষ হওয়ার আগে একটি দলের সমর্থকরা ইটপাটকেল ছুঁড়ে, মাঠে ঢুকে লাইন্সম্যানকে লাঞ্ছিত করে খেলা বানচাল করার চেষ্টা করেছিল। দুই লাইন্সম্যানকে একইদিকের লাইনের কর্তব্য পালনের দায়িত্ব দিয়ে রেফারি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে খেলা সম্পন্ন করে সবার প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন।
যোগ্য দল হিসেবেই ইস্টএন্ড বয়েজ জয়লাভ করেছিল। খেলার দশ মিনিটে সাজুর লব ধরে সেন্টার ফরোয়ার্ড হাফিজ গোলরক্ষক সরকারকে পরাস্ত করে দলকে ১-০ গোলে এগিয়ে দিয়েছিল। খেলার শেষ মুহূর্তে ইস্টএন্ড বয়েজের লেফট আউট সাঈদের সজোরে মারা কিক বিপক্ষ দলের ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়। (২-০)।
প্লেয়ার লিস্ট
ইস্টএন্ড বয়েজ : আজম (গোলরক্ষক) ফারুক, বাবু, মনু, রতন, নিশি, স্বপন, ফিরোজ, হাফিজ, সাজু ও সাঈদ।
পাকিস্তান স্পোর্টিং : সরকার (গোলরক্ষক), মোহাম্মদ আলী,  সালাম, পান্না, নাজিমুদ্দিন, শাহাবুদ্দিন, মুসলেহউদ্দিন, পল্লব, ফ্রান্সিস পালমার এবং শওকত।
সেন্টার ফরোয়ার্ড দিপুর চমৎকার দুটি গোল ফায়ারকে ভিক্টোরিয়ার বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়েছিল। ১৮-৯-৬৭ তারিখে ভিক্টোরিয়া প্রথম গোল করে বিরতি পর্যন্ত ধরে রাখলেও শেষ পর্যন্ত ফায়ারের প্রচন্ড চাপে ভিক্টোরিয়াকে হার মানতে হয়েছিল। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, গত ৭-২-৬৭ তারিখে ভিক্টোরিয়া শৃংখলা ভঙ্গের কারণে তাদের ছয়জন খেলোয়াড়কে সাসপেন্ড করেছিল। এর ফলে টিমের শক্তি অনেক হ্রাস পেয়ে যায়  তবে দলের অবশিষ্ট খেলোয়াড় সমন্বয়ে গড়া টিম সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছে।
প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময় ভিক্টোরিয়ার সেন্টার ফরোয়ার্ড আলী ইমাম রাইট আউট কালামের কাছ থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত কিকের সাহায্যে সীতাংশুকে পরাস্ত করে দলকে এগিয়ে দিয়েছিল (১-০)।  ফায়ার গোল শোধ করার জন্য মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালাতে থাকে কিন্তু ভিক্টোরিয়ার মঈন আব্দুল্লাহ এবং সাদেকের গঠিত রক্ষণ দেয়াল ভেঙ্গে গোল করা সম্ভব হচ্ছিল না, তারা বিরতি পর্যন্ত বেশ কয়েকটা সুযোগ নষ্ট করেছিল।
বিরতির পর ফায়ার তাদের পরিকল্পিত আক্রমণ দ্বারা দু’বার ভিক্টোরিয়ার গোলমুখ খুলতে সক্ষম হয়েছিল আর এ প্রশংসনীয় কাজটি করেছিল তাদের সেন্টার ফরোয়ার্ড দিপু। দ্বিতীয়ার্ধের ৪ মিনিটে শরফুদ্দিনের পাসে দিপু প্রয়োজনীয় গোলটি করে দলকে সমতায় ফিরিয়েছিল (১-১) এবং ২৬ মিনিটে লেফট আউট সামাদের লব থেকে চমৎকার হেড দিয়ে গোল করে দলকে ২-১ গোলে লিড এনে দিয়েছিলÑ যা খেলার শেষ পর্যন্ত অুন্ন ছিল।
পুলিশ এবং বিজি প্রেস নিজেদের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়ে স্টেশনারি টিমকে রেলিগেশনের ফাঁদে ফেলে দিয়েছিল। পুলিশ, প্রেস এবং স্টেশনারি প্রত্যেকে ১৩ পয়েন্ট করে নিয়ে রেলিগেশন আতংকে ধুঁকছিল। স্টেশনারি তাদের লিগের খেলা শেষ করলেও পুলিশ এবং প্রেসের মধ্যকার শেষ খেলায় যে টিম হারবে, সে টিম অবনমিত হবে অর্থাৎ ২য় বিভাগে নেমে যাবে। এমনি এক জটিল সমিকরণ সামনে রেখে পুলিশ এবং প্রেসের গুরুত্বপূর্ণ খেলাটি ১৯-৯-৬৭ তারিখে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই দুই টিমের খেলার ফলাফলই নির্ধারিত হবে ৩ টিমের ভাগ্য, কোন টিমের ওপর রেলিগেশন খড়গ এসে পড়ে। একটি জয় অন্যটিমকে নিচে নামিয়ে দিতে পারে। এরকম পরিস্থিতিতে পুলিশ কিংবা প্রেস কোন টিমই ঝুঁকি নিতে চায়নি, তারা ড্র করাটাকেই বেছে নিয়েছিল বলে অনেকের ধারণা। ফলে স্টেশনারি ঘটনার শিকারে পরিণত হয়েছিল।
টিম    খেলা    জয়    ড্র    পরা    পক্ষে    বিপক্ষে    পয়েন্ট
পুলিশ    ২৪    ৫    ৪    ১৫    ২০    ৫০    ১৪
প্রেস    ২৪    ৩    ৮    ১৩    ১৭    ৬৭    ১৪
স্টেশনারি    ২৪    ৩    ৭    ১৪    ১২    ৫০    ১৩
খেলার বিবরণে বলা যেতে পারে যে, মাঠে পূর্ণ ৭০ মিনিট পরিকল্পনাহীন আর উদ্দেশ্যহীন খেলা হয়েছে। কোন দলই গোল করার আগ্রহ দেখায়নি। এ খেলাটি পূর্বনির্ধারিত (পাতানো) ছিল বলে ক্রীড়ামহলে জোর সন্দেহ ছিল এবং এ বিষয়টি ক্রীড়াঙ্গনে সবার কাছে ছিল খুবই হতাশাজনক ও দুঃখজনক।
খেলোয়াড় তালিকা
পুলিশ : মালাকার (গোলরক্ষক), নূরু, কায়েস, মোহাম্মদ আলী, মেহবুব, আখতার, এরশাদ, হাফিজ, রহিম, নজু এবং সাত্তার।
প্রেস : সেলিম (গোলরক্ষক), আজব আলী, আরশাদ, নওয়াব আলী, জিল্লু, রাজ্জাক, খালেক, সুভাষ, লালু, সেলিম এবং আমির আলি।
রেলওয়ে ব্লুজ ওয়ারীকে ২-১ গোলে হারিয়ে চমক দিয়েছিল। তারা বিরতি পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল। খেলা শুরু থেকেই রেলওয়ে ওয়ারীর ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে। ওয়ারী নিজেদের গুছিয়ে নেয়ার আগেই রেলের আলিম গোল করে দলকে ১-০ এগিয়ে দিয়েছিল এবং তাকে অনুসরণ করেছিল তারই সহ-খেলোয়াড়  রাইট আউট নুরুল্লাহ। দ্বিতীয়ার্ধে ওয়ারী নিজেদেরকে সংঘবদ্ধ করে আক্রমণ চালিয়ে তাদের সেন্টার ফরোয়ার্ড নিশিথের মাধ্যমে একটি গোল শোধ দিতে সক্ষম হয়েছিল (২-১)।
ফায়ার এবং পিডব্লিউডি পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েছিল ১-১- গোলে ড্র করে। ফায়ার প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল। খেলা শুরু থেকে ফায়ারম্যানরা ভাল খেলে বিপক্ষ সীমানায় আক্রমণ চালিয়েছিল কয়েকবার আর সফল হয়েছিল মাত্র একবার আশরাফের মাধ্যমে। দ্বিতীয়ার্ধে পিডব্লিউডি গোল শোধ করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে কাক্সিত ড্রটি লাভ করেছিল তাদের বুলবুলের মাধ্যম (১-১)

১০১
চৎব-ঙষুসঢ়রপ ঐড়পশবু ঋবংঃরাধষ’এ অংশ নিতে লন্ডন যাওয়ার পথে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় হকি টিম ২ সপ্তাহের জন্য পাকিস্তান সফর করেছিল। এই সফরে তারা ৩টি টেস্ট ম্যাচ এবং ৭টি জোনাল ম্যাচ খেলে নিজেদেরকে প্রস্তুত করে হকি ফ্যাস্টিভেলে অংশগ্রহণ করা ছিল তাদের উদ্দেশ্যে। অস্ট্রেলিয়া টিমের মূল লক্ষ্য ১৯৬৮ সালের ম্যাক্সিকো সিটি অলিম্পিক। ১৯৬৪ সালে টোকিও অলিম্পিকে তারা জার্মানীকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করে ব্রোঞ্জ মেডেল পেয়েছিল। আগামীতে আরো ভালো করার পরিকল্পনা নিয়ে তারা হকি ফ্যাস্টিভেল এবং পাকিস্তান সফর করেছিল।
অস্ট্রেলিয়া টিমের সফর উপলক্ষ্যে পূর্ব এবং পশ্চিম পাকিস্তানের হকি অঙ্গনে বেশ সাড়া পড়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তানে তারা দুটো প্রদর্শনী ম্যাচ খেলবে বলে খেলোয়াড়/কর্মকর্তা সকলের কর্মব্যস্ততা বেড়ে গিযেছিল। ১৯৬৪ সালে জাপান জাতীয় হকি টিম পুর্ব পাকিস্তানে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন পুর্ব পাকিস্তানের হকি খেলোয়াড়রা বিদেশী আর কোন দলের সাথে খেলার সুযোগ পায়নি। তাই দুটো প্রদর্শনী ম্যাচের সুযোগ পেয়ে তারা উত্তেজিত/ উৎসাহিত হয়েছিল। 
এদিকে ঢাকা ফুটবল লীগ একেবারে শেষ পর্যায়ে, মাত্র দুটি ম্যাচ বাকি। পিডাব্লিউডি বনাম ওয়ারী এবং মোহামেডান বনাম ইপিআইডিসি। মধ্যে লীগের মূল আকর্ষণ মোহামেডান ইপিআইডিসি ম্যাচ, সে ম্যাচটি ছিল শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। আমরা তখনও অপরাজিত ছিলাম এবং ইপিআইডিসি টিম থেকে দু পয়েন্ট এগিয়ে ছিলাম। ইসমাইল এরকম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ইপিআইডিসি গোল্ড শিল্ড খেলতে মূলতান (পশ্চিম পাকিস্তান) যেতে গিয়েছিল।
দুটি জোনাল ম্যাচের জন্য ইপিএসএফ হকি কমিটি ৪ঠা আগস্ট থেকে ১২টি কাবের ৫৯ জন হকি খেলোয়াড়কে ক্যাম্পে ডেকেছিলেন। ওয়ারী কাব থেকে ফ্রান্সিস, মোমতাজ, কামাল হায়দার শফিক এবং সাহেদ। ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে রঞ্জিত দাস, সাবের আলী, আনোয়ার হোসেন, এহতেশাম, আব্দুল হক, মির্জা ফরিদ মিলু, বশীর আহমেদ, মির আনোয়ার করিম, আসগর আলী, ফরিদ এবং ইকবাল।
ভিক্টোরিয়া থেকে : মাহমুদ, রাজ্জাক, আজিজ, হাবিবউল্লাহ এবং আরশাদ। পাকিস্তান স্পোর্র্টিং থেকে নাসের, বুলবুল, খুরশীদ, মোহামেডান থেকে সেলিম, পারভীন, ইব্রাহিম, সাবের, জিয়া এবং রহিম বেগ। পুলিশ টিম থেকে মান্নান, শরিফ এবং গফুর। কম্বাইন্ড স্পোর্টিং থেকে সাব্বির ইউসুফ, মো. মহসিন, আব্দুস সাদেক, বুলবান, প্রতাপ শংকর, কাদের, ওমেদ আলী ও আলম।
সকালে হকি ক্যাম্পে অনুশীলন বিকেলে মোহামেডানের সাথে টিম প্র্যাকটিস এভাবেই ব্যস্ততার দিন কাটাচ্ছিলাম। অস্ট্রেলিয়া হকি টিমের ঢাকা আগমনের ১০ দিন বাকি (৪ঠা আগস্ট থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর) তখনও পূর্ব পাকিস্তান হকি টিমের  বাছাই পর্ব শেষ হইনি এরই মধ্যে চট্টগ্রাম জোনাল টিম নিয়ে সমস্যা হয়েছিল, চট্টগ্রাম ডিএসএ এর সেক্রেটারী ইপিএসএফকে পাস কাটিয়ে সরাসরি পাকিস্তান হকি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন, ৪/৫ জন পাকিস্তানী জাতীয় খেলোয়াড়কে চট্টগ্রাম জোনাল টিমের পক্ষে খেলার অনুমতি দিলে চট্টগ্রাম টিম শক্তিশালী হবে এবং অস্ট্রেলিয়া টিমের বিপক্ষে জোড়দার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে। তখনও সিদ্ধান্ত হয়নি কারা টিম গঠন করবে এবং কোন খেলোয়াড় কোথায় খেলবে। এরকম এক সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে গিয়েছিল পুর্ব পাকিস্তানের জোনাল প্রদর্শনী ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত ইপিএসএফ হকি কমিটি শক্ত হাতে সমস্ত সমস্যা  সমাধান করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, ইপিএফসএফ এর হকি কমিটি ঢাকা এবং চট্টগ্রামের দুই জোনাল ম্যাচের জন্য পূর্ব পাকিস্তানী নিজস্ব খেলোয়াড় দিয়েই দল গঠন করবে। চট্টগ্রাম জোন হবে ইস্ট পাকিস্তান গভর্নরস একাদশ এবং ঢাকার জোনাল টিম হবে ইপিএসএফ একাদশ এই দু নামেই তারা অংশগ্রহণ করবে।  এই কমিটি ৫৯ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে ২৯ জনকে বাছাই করেছিল এবং এদের মধ্য থেকেই ফাইনাল সিলেকশন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।
অস্ট্রেলিয়া হকি টিমের ঢাকা আগমনের পূর্বে ফুটবল লীগের পিডাব্লিউডি বনাম ওয়ারী খেলার পর স্টেডিয়ামে সব ধরনের খেলা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
২৩শে সেপ্টেম্বর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত (একমাত্র) খেলায় পিডাব্লিউডি ওয়ারীকে ৮-০ গোলের বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছিল। খেলার উল্লেখযোগ্য এবং আকর্ষণীয় বিষয় ছিল পিডাব্লিউডি দলের অত্যন্ত তুখোর এবং গোল পিপাসু সেন্টার ফরোয়ার্ড সুজার প্রশংসনীয় হ্যাট্রিক সহ ৬ গোল। প্রথম পর্বে ওয়ারী হেরেছিল ১-৩ গোলে। এ খেলার সাথে ওয়ারী তাদের লীগের পর্ব শেষ করেছিল মাত্র ১৯ পয়েন্ট সংগ্রহ করে। তারা ৬টি  জয় ৭টি ড্র এবং ১১টি ম্যাচ হেরেছিল।
গোলের সংখ্যাতেই ফুটে ওঠে খেলার চিত্র আর সেটা যে এক তরফা খেলা হয়েছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পিডাব্লিউডি ভাল খেলেই জয়ী হয়েছিল। তারা সর্বদিক দিয়েই উন্নতমানের খেলা প্রদর্শন করে ওয়ারীকে আউট প্লেইড করে দিয়েছিল। মাঠের কর্তৃত্ব বজায় রেখে ওয়ারীকে কোণঠাসা করে রেখেছিল। খেলার ৯ মিনিটে পিডাব্লিউডি লীড নেয় তাদের সেন্ট্রার ফরোয়ার্ড সুজার মাধ্যমে। ওয়ারীকে আক্রমণ চালাবার কোন সুযোগ না দিয়েই সুজা তার হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে ফেলেছিল বিরতির পূর্বেই সে তার দ্বিতীয় গোল করেছিল ২৬ মিনিটে আর তৃতীয় গোল করেছিল ৩১ মিনিটে। সূজার এই হ্যাটট্রিক ছিল মৌসুমে তার তৃতীয় হ্যাটট্রিক।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলার উল্লেখ করার তেমন কিছুই ছিল না। শুধুমাত্র ওয়ারী কাব এ অংশে মাত্র ৫টি গোল হজম করেছিল। সূজা তার গোলের সংখ্যা হালিতে পূর্ণ করেছিল দ্বিতীয়ার্ধের ১১ মিনিটে। আবিদ হোসেন বাবুলের পাশে ৫ম গোল করলে কয়েক মিনিট পর বাবুল সেটাকে অর্ধডজনে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর সূজা যার গোল করা নেশায় পরিণত হয়েছিল সে পরপর দু গোল করে নিজের নামের পাশে গোলের সংখ্যা ৬ বা অর্ধডজন লিখিয়ে নেয় আর সে সুবাদেই পিডাব্লিউডি ওয়ারীর বিপক্ষে ৮-০ গোলের বড় জয় পেয়েছিল।
খেলোয়াড় তালিকা
পিডাব্লিউডি : মতিন (গোলরক্ষক), কানু, মোহাম্মদ আলী, হামিদ, বিমল, ওয়াহেদ, সাইফুল, আবিদ হোসেন, সূজন, ধীরেন ও বুলবুল।
ওয়ারী : খোকন (গোলরক্ষক), নূরুল ইসলাম, নজর, শওকাতউল্লাহ, বেলার, খলিল, তপন, ভুট্টো, নিশিথ, আজিজ এবং মাহমুদ।
ঢাকায় অস্ট্রেলিয়া টিমকে অভ্যর্থনা জানানোর প্রস্তুতি চলছিল এই ফাঁকে ইপিআইডিসি টিম মুলতানের প্রসিদ্ধ ফাইড লাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট ইসমাইল গোল্ডশিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিমান বন্দরে পৌঁছাবে তাদের সমর্থক এবং অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং ক্রীড়ামোদীসহ বহু লোক তাদেরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিল। ইপিআইডিসি একমাত্র পূর্ব পাকিস্তানের ফুটবল টিম যারা প্রথমবারের মতো ১১তম ইসমাইল গোল্ডশিল্ড শিরোপা অর্জন করেছিল। ইপিআইডিসি পাকিস্তানের অন্যতম শক্তিশালী ফুটবল টিম করাচি মিডনিসিপ্যাল কাবকে (কেএমসি) সেমিফাইনালে ৩-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পাকিস্তান ওয়েস্টার্ন রেলওয়ে লাহোর এর মুখোমুখি হয়েছিল ২০ সেপ্টেম্বর।  ইপিআইডিসি পেনাল্টি থেকে করা একমাত্র গোলে পাকিস্তান ওয়েস্টার্ন রেলওয়েকে হারিয়ে ইসমাইল গোল্ড শিল্ড শিরোপা লাভ করেছিল। মুলতানের কাশিমবাগ স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের অন্যতম সেরা দুটি ফুটবল টিমের খেলা দেখার জন্য প্রায় ৩০,০০০ হাজার দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন।
দু টিমের আক্রমণাত্মক খেলা দিয়ে শুরু হয়েছিল ফাইনাল খেলাটি। উঁচু মানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূল খেলা দর্শকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। ইপিআইডিসি দলের গনি আসলাম জব্বর চমৎকার খেলেছে আর রেলদলের ইদ্রিস ও ইউনুস ভাল খেলেছে তবে ইপিআইডিসির গোলরক্ষক হাকিম চমৎকার কিপিং করেছে এবং নিশ্চিত গোল সেভ করে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। খেলার ২০ মিনিটে রেল দলের কাইয়ুম নিজ পেনাল্টি এরিয়ার ভেতর হাত দিয়ে বল খেলায় ইপিআইডিসি পেনাল্টি লাভ করেছিল। আর তাদের আমিন বালুচ গোল করে দলকে ১-০ এগিয়ে দিয়েছিল। অবশিষ্ট সময় দু দলই ফুটবল যুদ্ধ করেছে কিন্তু কোন দলই আর গোল করতে পারে নাই। শেষ পর্যন্ত আমিন বালুচের গোলটাই ইপিআইডিসিকে  চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব এনে দিয়েছিল।
যারা সেদিন খেলেছিল :
ইপিআইডিসি : হাকিম (গোলরক্ষক), লাল মোহাম্মদ, আমিন বালুচ এবং আবদুল্লাহ, গফুর বালুচ এবং মুসা, সলিম, গনি, আসলাম, জব্বর এবং নবী।
পিডাব্লিউআর (লাহোর) : লতিফ (গোলরক্ষক), আরশাদ, কাইয়ুম এবং কামাল, আমীর গুল এবং নবী, ইউনুস, আইয়ুবদার, ইদ্রিস, মজিদ এবং আশিফ।
২৩ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান হকি দলের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল যারা আসন্ন অস্ট্রেলিয়া টিমের সাথে দুটি জোনাল ম্যাচে অংশগ্রহণ করবে। ২৭ তারিখ চট্টগ্রামে ইস্ট পাকিস্তান গভর্নরস একাদশ এবং ২৮ তারিখে ঢাকায় ইপিএসএফ একাদশ দুটি টিমের জন্য ভিন্ন ভিন্ন খেলোয়াড় বাছাই করা হয়েছিল।
ইস্ট পাকিস্তান গভর্নরস একাদশের খেলোয়াড় তালিকা : রঞ্জিত দাস এবং মাজেদ (গোলরক্ষক), মোমতাজ, সাবের আলী, আবিদ খান (ফুলব্যাক), এহতেশাম, আব্দুস সাদেক, ইব্রাহিম সাবের, মসসিন, হামিদ খান (হাবল) প্রতাপ শংকর, নিয়াজ, বশীর আহমেদ (ক্যাপ্টেন), খাজা, আব্দুল হক ফজলু এবং কে এ খান (ফরোয়ার্ড)।
ইপিএসএফ একাদশের খেলোয়াড় তালিকা : রঞ্জিত দাস এবং ফ্রান্সিস (গোলরক্ষক) মোমতাজ, সাবের আলী, সাব্বির ইউসুফ (ব্যাক) মহসিন, আব্দুস সাদেক, ইব্রাহিম সাবের, এহতেশাম, আবদুর রাজ্জাক (সোনা মিয়া), প্রতাপ, নিয়াজ আহমেদ (ক্যাপ্টেন) বশীর আহমেদ, রানা, মীর আনোয়ার করিম এবং বুলবান। এখানে একটি কথা উল্লেখ করতে চাই যে, আমাকে ঢাকা জোনের ইপিএসএফএর ক্যাপ্টেন মনোনীত করা হয়েছিল এবং নিয়াজকে চট্টগ্রামের জন্য কিন্তু আমার ব্যক্তিগত বিশেষ একটি কারণ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করে নিয়াজের সাথে ক্যাপ্টেন্সি বদল করে নিয়েছিলাম। কারণটি পরবর্তী একসময় লিখবো।
অস্ট্রেলিয়া হকি টিমকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য পাকিস্তান হকি ফেডারেশনের প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় উপস্থিত হয়েছিলেন কর্নেল আইএস দারা। যিনি টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি জানালেন, অস্ট্রেলিয়া হকি টিম সিঙ্গাপুর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় এসে পৌছাবে। দলে ৪ জন কর্মকর্তা ১৭ জন খেলোয়াড় এবং অস্ট্রেলিয়া হকি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট গৎ. ঋরহনু গপ ঘধনও দলের সাথে আসবেন। অস্ট্রেলিয়া টিমের পাকিস্তানে অবস্থানকালে তাদের কর্মসূচী জানিয়ে দিলেন।
সফরের প্রথম খেলা ২৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে জোনাল প্রদর্শনী ম্যাচ ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জোনাল (প্রদর্শনী ম্যাচ) ২৯ সেপ্টেম্বর পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি লাহোর জোনাল ম্যাচ, ১ অক্টোবর লাহোর প্রথম টেস্ট ম্যাচ, ২ অক্টোবর সারগোদা জোনাল ম্যাচ। ৩ অক্টোবর রাওয়ালপিন্ডি ২য়টেস্ট ম্যাচ, ৪ অক্টোবর পেশাওয়ার- জোনাল ম্যাচ ৫ অক্টোবর মুলতান জোনাল  ম্যাচ, ৬ অক্টোবর বাহাওয়ালপুর-জোনাল ম্যাচ, ৮ অক্টোবর- করাচী ৩য় টেস্ট ম্যাচ, ৯ অক্টোবর হায়দ্রাবাদ জোনাল ম্যাচ, ১১ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়া টিম লন্ডনের পথে রওয়ানা হবে। মি. দারা, যিনি ১৯৬৪ সালে টোকিও অলিম্পিকে পাকিস্তান হকি টিমের ম্যানেজার কাম কোচের দায়িত্বে ছিলেন, অস্ট্রেলিয়া টিম সম্বন্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, শারীরিক দিয়ে তারা অত্যন্ত রোবাস্ট তার সাথে আমাদের খেলার পদ্ধতি একত্রিত করে তারা শক্তিশালী একটি দল। ১৯৬৪ সালে টোকিও অলিম্পিকে তারা জার্মানীকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করে ব্রোঞ্জ পেয়েছিল। তাদের ঐ টিম থেকে ৭/৮ জন খেলোয়াড় বদল করে দলের শক্তি বৃদ্ধি করে সফরে বেরিয়েছে।
পূর্ব-পাকিস্তানে টেস্ট ম্যাচ কেন রাখা হয়নি এ প্রশ্নের উত্তরে মি. দারা বলেন, এখানকার খেলোয়াড়দের বেশি সুযোগ দেয়া হয়েছে দুটি জোনাল ম্যাচ রেখে। এখানকার ছেলেদের নৈপুণ্য গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে যাতে ভবিষ্যতে দেশের হকিতে তারা অবদান রাখতে পারে।
অস্ট্রেলিয়া টিমের লিয়াজো হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছি স্কো. লিডার ইমতিয়াজকে। 
৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য পাকিস্তান তাদের খেলোয়াড় তালিকা প্রকাশ করেছে। পাকিস্তান টিমের ক্যাপ্টেন করা হয়েছিল খালিদ মাহমুদ আহমেদকে এবং ভাইস ক্যাপ্টেন করা হয়েছিল সাঈদ আনোয়ারকে। পুরোটিমের তালিকা :-
গোলরক্ষক : জাকির হোসেন এবং আনোয়ার জাফর, ফুলব্যাক- তারিক আজিজ, রিয়াজউদ্দিন এবং তানভীর দার; হাফব্যাক-রশিদ আনোয়ার শাহ, সাঈদ আনোয়ার, রিয়াজ আহমেদ এবং  ফজলুর রহমান; ফরোয়ার্ডস : খালিদ মাহমুদ আহমেদ, খুরশীদ আলম, আজম আমানউল্লাহ, কাশানী, তারিক-নিয়াজী, লাইক আহমেদ, আসাদ মালিক এবং জাহাঙ্গীর বাট; ম্যানেজার- লে. কর্নেল আব্দুল হামিদ, যিনি পাকিস্তান টিমের সাবেক ক্যাপ্টেন।
ইস্ট পাকিস্তান গভর্নরস একাদশ টিমের আমরা ১৭ জন খেলোয়াড় ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে চট্টগ্রাম রওয়ানা হয়েছিলাম। সফরকারী অস্ট্রেলিয়া টিম ২৬ তারিখে ঢাকায় পৌছে পরদিন প্লেনে করে চট্টগ্রাম পৌছাবে সকালে, বিকালে তাদের সফরের প্রথম ম্যাচ খেলবে আমাদের সাথে।
চট্টগ্রামে এই প্রথম কোন আন্তর্জাতিক হকি খেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছিল বিধায় এখানকার ক্রীড়া কর্মকর্তারা খেলাকে ঘিরে সব অনুষ্ঠান সুন্দর এবং সফল করার জন্য যথেষ্ট সচেষ্ট ছিলেন। তারা চট্টগ্রামে খেলা দেখার জন্য টিকিটের ব্যবস্থা করেছিলেন।  টিকিটের মূল্য রাখা হয়েছিল গ্রাউন্ডে চেয়ার রুপি ১০/-, প্যাভিলিয়ান ৩/- পশ্চিম গ্যালারী ১/- পূর্ব গ্যালারি ৫০ পয়সা, লেডিস ৫০/ পয়সা এবং ছাত্র ও সেনাবাহিনীর জন্য ৩৫ পয়সা। চট্টগ্রাম জোনাল ম্যাচের জন্য আম্পায়ার মনোনীত হয়েছিলেন জনাব এ এম শেরা এবং জনাব নিয়াজ আহমেদ খান।
২৬ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়া হকি টিম থাই বিমানযোগে সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকা বিমান বন্দরে সন্ধ্যায় পৌছেছিল। ইপিএসএফ সভাপতি, পাকিস্তান হকি ফেডারেশনের সভাপতির পক্ষে গৎ. অওঝ উঅজঅ, খঃ. ঈড়ষ অ. ঐধসরফ এবং বহু সংখ্যক হকি অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ বিমান বন্দরে উপস্থিত হয়েছিলেন। বিমান বন্দরে অস্ট্রেলিয়া দলের ম্যানেজার কাম কোচ ঈ. গ. গড়ৎষু বলেন, আমরা এখানে শিখতে এসেছি, পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা অর্জন আমাদের অনেক বড় উপকারে আসবে। অস্ট্রেলিয়া হকি ফেডারেশনের সভাপতি বলেন, লন্ডনে প্রি অলিম্পিক হকি ফ্যাস্টিভেল এবং অলিম্পিক গেমস ম্যাক্সিকো সিটির জন্য এই সফর অনেক উপকারে লাগবে। অস্ট্রেলিয়া টিমের ক্যাপ্টেন উড়হ গপ ডধঃঃবৎং, ২৬ বছরের একজন স্কুল শিক্ষক, ফুল ব্যাক পজিশনের খেলোয়াড়। তাদের অন্যান্য সদস্যদের তালিকা : ব্রিয়ান গ্লেন ক্রশ, বব এনড্রিও, মিখায়েল ও রেলি, ডন স্মার্ট, ডেনিস ম্যারেডিথ, পল ডিয়ারিং, রন রিলে, প্যাট নিলন, ট্রিভর রিচ, পল উইলট, আর্থার বুশ, জন সানডে, টন গোল্ডার, রবিন হোডার, ডেস পিলপার এবং ডাওগ হিল (আম্পার)। #


১০২
২৭ সেপ্টেম্বর নিয়াজ স্টেডিয়াম দর্শকে পরিপূর্ণ। প্রথমবারের মতো কোন বিদেশী হকি খেলা দেখার জন্য চট্টগ্রামের প্রায় পঁচিশ হাজার দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়ে অস্ট্রেলিয়া হকি টিমের চমৎকার ক্রীড়ানৈপুণ্য উপভোগ করেছিলেন। পাকিস্তান সফরের প্রথম ম্যাচে সব দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখে আমাদেরকে অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তান গভর্নরস একাদশ ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল। প্রথমার্ধে তারা ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল এবং দ্বিতীয়ার্ধে আরও ৩ গোল করেছিল। তাদের জয়ের মূলে ছিল সুঠাম দেহের খেলোয়াড়দের গতি এবং দলীয় সমঝোতা। বিশেষ করে তাদের শক্তিশালী রক্ষণভাগের দৃঢ়তা ও মনোবল। 
চট্টগ্রামে বৃষ্টি হচ্ছিল, মাঠ ছিল কর্দমাক্ত আর নরম। এরকম মাঠে সুন্দর হকি খেলা সম্ভব ছিল না। বিশেষ করে আমাদের দেশে হয়ে থাকে শুকনো মৌসুমে, শুকনো মাঠে আর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে; সুতরাং আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে পারছিলাম না। আমাদের খেলার গতি, স্টিক ওয়ার্ক, পাসিং, দলীয় সমঝোতা এবং পজিশনাল সেন্স ছিল চোখে পড়ার মত দুর্বল। আমাদের খেলার মান এবং ব্যক্তিগত পারফরমেন্সের ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে মর্নিং নিউজ পত্রিক লিখেছিল, ‘বশীর তীব্র চেষ্টা করেছিল আক্রমণাত্মক খেলা খেলে দলকে  গোল উপহার দেয়ার কিন্তু অন্যরা ছিল ব্যর্থ। রাইট হাফ মহসীন ভাল খেলেছে, তবে লেফট হাফ ইব্রাহিম সাবেরের খেলা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল বেশি।’
আমাদের সবচেয়ে দুর্বল দিক ছিল আমাদের ডিফেন্স। মোমতাজ এবং সাবের আলী তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব, সমঝোতার অভাব, তারা গ্যাপ কভার করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিল, যার ফলে অস্ট্রেলিয়ার ফরোয়ার্ডরা সহজেই আমাদের সীমানায় ঢুকে গোলের সুযোগ সৃষ্টি করতে পেরেছে আর আমাদের গোলরক্ষককে এতগুলো গোল হজম করতে হয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়া টিমের মূল নায়ক ছিল লেফট-আউট ডন স্মার্ট, নামের মতই স্মার্ট খেলা প্রদর্শন করে সে সবার প্রশংসা পেয়েছিল। তাদের সেন্টার ফরোয়ার্ড রন রিলে আক্রমণভাগের প্রধান চালিকাশক্তি, খুবই চৌকস এবং সুযোগ সন্ধানী খেলোয়াড়। সে তার নৈপুণ্যের ঝলক দেখিয়ে প্রথম এবং চতুর্থ গোল করেছিল রাইট আউট রবিন হোডার অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সাথে বল নিয়ে আমাদের খেলোয়াড়দের পেছনে ফেলে বার বার সীমানায় ঢুকে পড়া এবং সহযোগী খেলোয়াড়কে নিখুঁত পাস দেয়া ছিল দেখার মত। আর এটা তার  পক্ষে সম্ভব হয়েছিল তার ইন সাইড খেলোয়াড়ের সহযোগিতা। বৃষ্টিভেজা মাঠে অস্ট্রেলিয়া তাদের দুই উইংকে বেশি ব্যবহার করেছিল। তাদের রক্ষণে ব্রায়ান গ্লেনক্রস এবং ডেসপিপার শক্ত হাতে ডিফেন্স সামাল দিয়েছিল। সময়মত এবং সঠিকভাবে আমাদের পাসগুলোকে ইন্টারসেপ্ট করে দ্রুততার সাথে দলকে বিপদমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ডিফেন্সের তুলনায় আক্রমণ করেছে বেশি এবং সেটা কাজে লাগিয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে ৩ গোল দিয়ে। তারা ৫টি লং কর্নার এবং ৭টি শট কর্নার পেয়েছিল। অন্যদিকে আমরা ২টি লং কর্নার ও ৪টি শট কর্নার লাভ করেছিলাম। তারা খেলার পঞ্চম মিনিটে লং কর্নার আদায় করলে আমরা ১০ মিনিটে লাভ করেছিলাম; তবে কেউ এ থেকে সুবিধা লাভ করতে পারিনি।
অস্ট্রেলিয়া হকি টিম অত্যন্ত গুছিয়ে লম্বা লম্বা পাসে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চট্টগ্রামের ২৫ হাজার দর্শকদের সামনে আমাদের বিপক্ষে তাদের প্রাধান্য এবং শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়ে সবার মন জয় করেছিল। মাঠের অবস্থা ভাল থাকলে তারা আরও ভাল খেলা প্রদর্শন করতে পারতো বলে অনেকের ধারণা। তবে ভাল মাঠে আমরাও যে ভাল খেলি এবং অস্ট্রেলিয়া টিমের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক একটি আকর্ষণীয় খেলা উপহার দিতে পারতামÑ
মনের এরকম একটা বিশ্বাস নিয়ে ঢাকায় ফেরার উদ্দেশ্যে রাতের ট্রেনে চেপে বসেছিলাম।
খেলার পূর্বে চট্টগ্রাম ডিভিশনাল কমিশনারের সাথে দুই টিমের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছিল। রেডিও পাকিস্তান চট্টগ্রাম নিয়াজ স্টেডিয়াম থেকে সরাসরি খেলার ধারাবিবরণী প্রচার করেছিলেন, ধারাবিবরণী করেছিলেন ইফতেখার আহমেদ এবং হাসকী বেগ। আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এএম শেরা এবং নিয়াজ আহমেদ খান।
২৮ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়া হকি টিম ঢাকায় জয়লাভ করেছিল। আমরা (ইপিএসএফ একাদশ) সেদিনও পরাজিত হয়েছিলাম ৪-০ গোলে। পাকিস্তান সফরের প্রথম দুটি জোনাল ম্যাচ ঢাকা এবং চট্টগ্রামে বৃষ্টিভেজা ভারি মাঠে অস্ট্রেলিয়া তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়ে জয়লাভ করেছিল। অস্ট্রেলিয়া ১৯৬৪ টোকিও অলিম্পিকে তৃতীয় স্থান পেয়েছিল এবং তাদেরকে বিশ্বের তৃতীয় হকি শক্তি হিসেবে ধরা হয় আর এরাই ১৯৬৮ সালে মেক্সিকো অলিম্পিকে পাকিস্তান-ভারতের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে হকি অঙ্গনের ধারণা ছিল। তারা বিশ্ব হকির দিক পরিবর্তন করে দিতে সক্ষম।
গতকালের মুষলধারার বৃষ্টি এবং মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকানো বিকেলে মাঠের অবস্থা রাগবি মাঠে পরিণত হয়েছিল। এ মাঠেও অস্ট্রেলিয়া দৈহিক শক্তি এবং দলীয় সমঝোতা দিয়ে আমাদের সীমানায় হানা দিচ্ছিল। তাদের কোন খেলোয়াড় একক ভাল খেলেছে চিহ্নিত করা যাবে না; তবে তাদের অধিনায়ক ম্যাক ওয়াল্টার দলের মূল চালকাশক্তি। দলের অন্যদের সাথে নিয়ে একটি দল হিসেবে খেলা, লড়াই করার মনোবল জোগানো, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রেরণা দেয়াÑ সব মিলিয়ে সে একজন উঁচুমানের খেলোয়াড়। দলের চার গোলের মধ্যে দুই গোল সে করেছিল।
অস্ট্রেলিয়া টিমের রোবাস্ট এবং গতিসম্পন্ন খেলোয়াড়দের আমাদের দ্বারা কোন শক্ত বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। আমাদের গোলরক্ষক রঞ্জিত দাস তার দায়িত্ব ভালভাবে পালন করেছে, যার জন্য অস্ট্রেলিয়াকে চার গোলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হয়েছিল। আমাদের রাইট ফুলব্যাক সাবের আলী পরিশ্রম করে খেলেছে। আমাদের ফরোয়ার্ড  লাইন যথেষ্ট তৎপর ছিল। প্রতাপ, আবদুল হক, নিয়াজ, খাজাকে নিয়ে আক্রমণ চালিয়েছিÑ গোল করার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। কিন্তু ম্যাক ওয়াল্টার্স যে অস্ট্রেলিয়া টিমের স্তম্ভ, তাকে কাটিয়ে গোল করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
অস্ট্রেলিয়া খেলা শুরুর সাথে সাথে আক্রমণ চালাতে থাকে। তারা ১৮ মিনিটে লিড নেয়ার একটা সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেছিল ‘পেনাল্টি স্ট্রোক’ মিস করে। ২৭ মিনিটে আমি একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্সকে কাটিয়ে ডি-বক্সের ভেতর ঢুকে গোলপোস্টে হিট করেছিলাম কিন্তু হিটে সেরকম জোর না থাকায় গোলরক্ষক প্যাড করে বল কিয়ার করে দেয়। তারপরও আমরা অস্ট্রেলিয়া ক্যাম্পে বেশ কয়েকবার ঢুকলেও ডিপ ডিফেন্স ভেদ করা সম্ভব হয়নি।

রঞ্জিত দা একটি বল কিয়ার করতে গিয়ে লং কর্নার করেনÑ যা ম্যাক ওয়াল্টার্স দুর্দান্ত হিট মেরে গোল করে। রঞ্জিত দা আটকাবার কোন সুযোগই পাননি। বিরতির পর অস্ট্রেলিয়া মাঠের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তাদের বাধা দিতে পেছনে পেছনে ছুটতে হয়েছে। লেফট উইং স্মার্ট-এর বদলে খেলোয়াড় সানডে খেলতে নেমেই দলের দ্বিতীয় গোল করে। আমাদের চেপে ধরা অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় শট কর্নার আদায় করে নেয় এবং ম্যাক ওয়াল্টার্স দুর্দান্ত হিটে আবারও রঞ্জিত দাকে পরাস্ত করে (৩-০)। দ্বিতীয়ার্ধের ২৫ মিনিটে তাদের রিলে জটলার মধ্য থেকে গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে (৪-০) দিলে খেলা শেষে ফলাফল সেটাই অুণœ থাকে। খেলার পূর্বে দুই টিমকে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী এসএম আমজাদ হোসেনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছিল।
খেলোয়াড় তালিকা
অস্ট্রেলিয়া : উবধৎরহম (ইঁংপয), গপ ডধঃঃবৎং, এষবহ ঈৎড়ংং (জরপযবু), গবৎবফরঃয, উবং চরঢ়বৎ, ঙ’জবরষষু, ঐড়ফফবৎ, অহফৎব,ি জবরষু, ঝসধৎঃ (ঝঁহফধু).
ইপিএসএফ একাদশ : রঞ্জিত দাস, সাবের আলী, মহসিন, এহতেশাম, সাদেক, ইব্রাহিম সাবের, আব্দুল হক, প্রতাপ হাজরা, নিয়াজ আহমেদ, বশীর আহমেদ এবং খাজা।
আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন  আলমগীর মো. আদেল এবং শামী খান। #

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমাদের ফুটবলাররা-২

আমাদের ফুটবলাররা

সোনালি অতীতের দিনগুলো / বশীর আহমেদ

ফুটবলের সৌন্দর্য, সৌন্দর্যের ফুটবল / দুলাল মাহমুদ

‘ফ্লাইং বার্ড’ বলাই দে/ দুলাল মাহমুদ

প্রতিরোধের সেই দুই ম্যাচ / দুলাল মাহমুদ

ফুটবল মাঠের অন্য এক লড়াই

ফুটবলে জীবনের জয়গান / দুলাল মাহমুদ Dulal Mahmud

বিশ্বকাপ ফুটবল কেন বাংলাদেশের উৎসব? / দুলাল মাহমুদ

আমার সাঁতার জীবন-অরুন নন্দী